আওয়ামী লীগের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের সান্নিধ্য পাওয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি ওয়াশিংটন ডিসির বিশিষ্ট লবিং ফার্ম স্ট্রেক গ্লোবাল ডিপ্লোম্যাসির সঙ্গে ২ লাখ মার্কিন ডলারের চুক্তি করেছেন। মার্কিন বিচার বিভাগের ওয়েবসাইটে এই চুক্তির তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
স্ট্রেক গ্লোবাল ডিপ্লোম্যাসির চেয়ারম্যান রবার্ট স্ট্রেকের সঙ্গে এই চুক্তি সই করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়, যিনি ওয়াজেদ ইনকরপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চুক্তির আওতায়, প্রতিষ্ঠানটি আওয়ামী লীগের পক্ষে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাহী ও বিচারবিভাগের কাছে তুলে ধরবে।
চুক্তির মেয়াদ ধরা হয়েছে ৬ মাস এবং এর জন্য লবিস্ট ফার্ম পাচ্ছে ২ লাখ মার্কিন ডলার, যা প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার সমান।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন ইস্যুতে লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন প্রায়ই উত্তপ্ত থাকে।
টানা দেড় দশক ধরে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা অভিযোগ করে আসছেন যে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশে মার্কিন প্রভাব বিস্তারের জন্য লবিস্ট নিয়োগ করেছে।
৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তখন আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার বা পলাতক ছিলেন।
এই রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের জন্য শেখ হাসিনার ছেলে ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন।
ফাইল ঘেঁটে দেখা যায়, সজীব ওয়াজেদের এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি মার্কিন নীতিনির্ধারকদের কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া এই চুক্তির মেয়াদ থাকবে ৬ মাস।
এর আগেও ২০০৪ সালে সজীব ওয়াজেদ জয় ‘অ্যালকাটেল অ্যান্ড ফা’ নামক একটি লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন, যেখানে দাবি করা হয়েছিল বিএনপি জঙ্গিবাদকে সহায়তা করছে এবং ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ তা দমন করবে।
অপরদিকে, ২০১৯ সালে বিএনপি ব্লুস্টার স্ট্র্যাটেজিসসহ একাধিক লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করে, যেখানে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র হত্যা করার অভিযোগ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট ফার্মগুলো বিভিন্ন ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চা শিল্প থেকে তৈরি পোশাক—বিভিন্ন খাতে মার্কিন বাজার ধরার জন্য লবিস্ট ফার্মের সাহায্য নেওয়া হয়।
মার্কিন বিচার বিভাগের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ সংক্রান্ত কমপক্ষে ৩৭৬টি লবিস্ট ফাইলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যা প্রমাণ করে যে লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা নতুন কিছু নয়।
জেএন/পিআর