টেস্ট সিরিজ জয়ের পর এবার রঙিন পোশাকে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে ভারত। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে গোয়ালিয়রে মাঠে নেমেছে দুই দল। ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ভারতের বিপক্ষে এই সিরিজ দিয়ে নতুন উদ্যমে শুরুর প্রত্যয় টাইগারদের। কিন্তু আগে ব্যাট করতে নেমে ফের ব্যাটিং ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে ১২৭ রানে অলআউট হয় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। বাংলাদেশের দেওয়া অল্প রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১১.৫ ওভারেই ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় ভারত। তাতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেলো সূর্যকুমার যাদবের দল।
বাংলাদেশের দেওয়া ১২৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন সাঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা। এই দুই জনের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় ম্যান ইন ব্লুরা। স্যামসন ও অভিষেকের ব্যাটে ২৫ রানের জুটি গড়ে তারা। তবে এরপরই ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট কাটা পরে সাজঘরে ফেরেন শর্মা। যাবার আগে ১৬ রান করেন তিনি।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে বাইশ গজে আসেন ভারতের অধিনায় সূর্যকুমার যাদব। স্যামসনকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন সূর্য। তাদের মারকুটে ব্যাটিংয়ে দিশেহারা হয় টাইগার বোলাররা। তবে দলীয় ৬৫ রানে সূর্য আউট হলে ভাঙে ৪০ রানের এই জুটি। প্যাভিলিয়নে যাবার আগে ২৯ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক।
সঙ্গীর বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেননি ইনিংস ওপেন করতে নামা স্যামসন। দলীয় ৮০ রানে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। যাবার আগে ২৯ রান করেন তিনি। এরপর চতুর্থ উইকেটে হার্দিক পান্ডিয়া-নীতিশ কুমার রেড্ডির ব্যাটে জয়ের ভীত তৈরি করে ফেলে ভারত।
শেষ পর্যন্ত নিতিশ ১৬ ও হার্দিকের ৩৯ রানে অপরাজিত ইনিংসে ৪৯ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌছে যায় ভারত। বাংলাদেশের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তাতে ৭ উইকেটের বিশাল জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের ১-০ তে এগিয়ে রইল ভারত।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন লিটন কুমার দাস ও পারভেজ ইমন। নতুন জার্সিতে নতুন ভাবে শুরুর প্রত্যায় করলেও ওপেনারদের ফর্মে কোনো পরিবর্তন হয়নি। আজও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে টাইগার ওপেনাররা। বলের মুখোমুখি প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান লিটন। তবে আর্শদীপ সিংয়ের করা পরের বলেই আউট হন তিনি।
এদিকে দীর্ঘদিন পর দলে ফিরলেও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি ইমন। ৮ রানে আর্শদীপের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন তিনি। দলীয় ১৪ রানের মাথায় দুই ওপেনারের বিদায়ে বেশ চাপে বাংলাদেশ। দুই উইকেটই নিয়েছেন পেসার আর্শদীপ।
এরপর পাওয়ার প্লে-র বাকি সময় দেখে খেলেন শান্ত ও হৃদয়। এই দুই জনের ব্যাটে পাওয়ার প্লের বাকি সময় ৩৯ রান সংগ্রহ করে। তবে পাওয়ার প্লের পরের ওভারেই ২৬ রানের জুটি ভাঙ্গে তাদের। দলীয় ৪০ রানে বরুণ চক্রবর্তীর বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তাওহীদ হৃদয়। যাবার আগে ১৮ বলে ১২ রান করেন তিনি।
এরপর দ্রুতই আরও দুই উইকেট হারায় টাইগাররা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২ বলে ১ ও জাকের আলি ৬ বলে ৮ রান করে আউট হন। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একমাত্র আস্থা হয়ে টিকে ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু অন্য সবার মতো হতাশ করলেন তিনিও। থিতু হয়েও পারলেন না ইনিংস বড় করতে।
দলীয় ৭৫ রানে বারুনের বলে আউট হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন শান্ত। যাবার আগে ২৫ বলে ২৭ রান করেন শান্ত। এদিকে শান্ত আউট হলে একপ্রান্ত ধরে রেখে ব্যাট করতে থাকেন মিরাজ। শেষ পর্যন্ত তার অপরাজিত ৩৫ রানের ক্যামিং ইনিংসে ১২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ভারতের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন বরুণ চক্রবর্তী ও আর্শদীপ সিং।
জেএন/এমআর