মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও বাজে শুরু হয় বাংলাদেশের। দলীয় ৪ রানেই ২ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
সেখান থেকে নাজমুল হোসেন ও মাহমুদুল হাসানের ৫৫ রানের জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা সামলেছে টাইগাররা।
তবে কাপ্তান শান্ত ২৩ রানে আউট হলেও মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে দিনের বাকি সময়টা পার করে দেন মাহমুদুল। আলোক সল্পতায় খেলা বন্ধের আগে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১০১।
৩৮ রানে অপরাজিত আছেন মাহমুদুল। ২৬ বলে ৩১ রানে অপরাজিত মুশফিকুর। ৩১ রানের ইনিংস খেলার পথে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ৬০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন এই ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে ১০১ রানে। তবে ইনিংস ব্যবধানে হারার শঙ্কা জাগলেও মাহমুদুল-মুশফিকে অস্বস্তি কেটেছে টাইগারদের। এরপরও চালকের আসনেই দক্ষিণ আফ্রিকা।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। প্রথম দিন বাংলাদেশকে অলআউট করে দিয়ে ৬ উইকেটে ১৪০ রান করে দিন শেষ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের দুই অপরাজিত ব্যাটার দুর্দান্ত শুরু করেন দ্বিতীয় দিনে।
ধীরে ধীরে লিডও বাড়তে থাকে প্রোটিয়াদের। কাইল ভেরেইনের সঙ্গে উইয়ান মুল্ডারের জুটিতে রানও আসতে থাকে।
বোলিংয়ে বাংলাদেশকে ভোগানো মুল্ডার হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ব্যাট হাতেও। ১৪তম টেস্টে এসে প্রথম ফিফটি পেলেন তিনি, এর আগে তার সর্বোচ্চ ছিল ৪২ রান।
হাফ সেঞ্চুরি থেকে তিন রান দূরে থাকতেই ফিরতে পারতেন মুল্ডার। কিন্তু নাঈম হাসানের বলে শর্ট লেগে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন মুমিনুল।
এরপর ম্যাচ বাংলাদেশের থেকে ক্রমেই দূরে সরে যেতে থাকে। তখনই দলের জন্য ত্রাতা হন হাসান মাহমুদ। দলকে প্রথম উইকেট এনে দিয়েছিলেন তিনিই।
পরের পাঁচটি উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। দ্বিতীয় দিনের সকালের সেশনে যখন ম্যাচ দূরে সরে যাচ্ছিল, তখন টানা দুই বলে দুই উইকেট এনে দিয়েছেন তিনি। শুরুটা করেন মুল্ডারকে দিয়ে।
১১২ বলে ৫৪ রান করে তিনি ক্যাচ দেন স্লিপে। পরের বলেই কেশভ মহারাজকে বোল্ড করে দেন হাসান।
হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগলেও সেটি অবশ্য পূরণ হয়নি। প্রথম সেশনের শেষটা আরও রঙিন করতে পারতেন তিনিই।
কিন্তু পারেননি রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া করে। হাসান মাহমুদের ফুল টসে সোজা খেলেন পিট। বোলারের হাত ছুঁয়ে স্টাম্পেই লাগে বল, তখন নন স্ট্রাইকার ক্রিজের ভেতরই আছেন। কিন্তু হুট করে স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে ব্যাটার দৌড় শুরু করেন।
শুরুতে হাসান মাহমুদ বুঝতে না পারলেও পরে বলের দিকে দৌড়ে যান। কিন্তু তিনি যতক্ষণে থ্রো করেন, ততক্ষণে ব্যাটার অনেক দূর পৌঁছে গেছেন; হাসানের থ্রোও ব্যাটারের গায়ে লাগে। ভেরেইনে ও পিট দুজন অপরাজিত থেকে যান মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে।
ফেরার পরই জুটির পঞ্চাশ পূরণ করেন তারাও। প্রথম ছয় উইকেটে পঞ্চাশ রানের একটি জুটিও পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা, এরপর পায় টানা দুটি।
১৩০ বল স্থায়ী এই জুটিতে আসে ৬৬ রান। এটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ৮৭ বলে ৩২ রান করেন তিনি।
তার বিদায়ের আগেই টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক তুলে নেন ভেরাইনে। দুর্দান্ত ইনিংসের জন্য তিনি পান করতালিও।
শেষ ব্যাটার হিসেবে অবশ্য তাকেই ফিরিয়েছে বাংলাদেশ। মিরাজের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়েছেন তিনি। ১৪৪ বলের ইনিংসে ৮টি চার ও দুটি ছক্কায় ১১৪ রান করেন ভেরাইনে।
জেএন/পিআর