জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ উপলক্ষে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে উপস্থিত নেতারা দেশের চলমান সংকট মোকাবিলা, জুলাই গণহত্যার বিচার এবং জাতীয় ঐক্য সুসংহত করার বিষয়ে একমত হন। মতবিনিময় সভায় ৩৪টি ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হয়ে রাত ১০টায় শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। শিবিরের দফতর সম্পাদক নুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম।
সভায় অংশগ্রহণকারী নেতারা বলেন, জুলাই গণহত্যার দ্রুত বিচার এবং জাতির ঐক্যকে বিনষ্টকারী দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রগুলো প্রতিহত করা ছাত্রসমাজের দায়িত্ব। ঐক্যবদ্ধ ছাত্রসমাজই পারে একটি ন্যায়ভিত্তিক, ইনসাফপূর্ণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে এবং অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে।
তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ রাখতে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার শুধু নিহতদের প্রতি দায়বদ্ধতা নয়, এটি জাতির প্রতি ন্যায়বিচারের অঙ্গীকার। সভায় আলোচনা হয়েছে, কীভাবে জনমত গঠন করে এই বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যায়।
তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর দেশকে বিভক্ত করার যে কোনো চেষ্টা প্রতিহত করতে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম।
সভায় ফ্যাসিবাদ পরবর্তী ছাত্র রাজনীতি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং ছাত্রসংগঠনগুলোর ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, এই আলোচনা ছাত্রসমাজের মধ্যে ইতিবাচক ও ন্যায়ভিত্তিক রাজনীতির ধারার প্রবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হবে।
এ সভায় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের সভাপতি মুহাম্মদ রায়হান আলী, জাগপা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি খালেদ মাহমুদ, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের সভাপতি মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীন, এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশনের সভাপতি তাসনিম বিন মাহফুজ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজের সভাপতি এহতেশামুল হক সাখী, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ নূর আলম, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন, ছাত্রফোরাম সভাপতি সানজিদ রহমান শুভ, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক সাঈদ হাসান, ভাসানী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের (রেজা) আহ্বায়ক মোল্যা রহমাতুল্লাহ, স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের মোকাররম হোসেন, হিল সোসাইটির সাজিদ মাহফুজ, একতার বাংলাদেশের এস এম রিদুয়ান, ইয়ুথ ফর বেটার সোসাইটির জোবায়ের সিদ্দিকী, ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশনের জাহিদুর রহমান এবং স্টুডেন্ট স্কলার্স ফাউন্ডেশনের মোজাফফর আহমেদ, স্টুডেন্ট এগেন্স্ট অপরেশনের মুখপাত্র আরাফাত হোসেন ভূঁইয়া এবং নিরাপদ বাংলাদেশ চাই-এর মুখপাত্র রায়হান উদ্দীন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের এই আলোচনা জনমনে পৌঁছাতে আপনারা সাহায্য করবেন।
জেএন/এমআর