চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের অটিজম ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রের উদ্যোগে ৩৩তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধি দিবস উপলক্ষে সোমবার সকালে আলোচনা সভা হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেনের সভাপতিত্বে হাসপাতালের লেকচার গ্যালারীতে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং অটিজম ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ডা. মাহমুদ আহমেদ চৌধুরী আরজু। মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ওয়াহিদা আক্তার লবনা। আরো বক্তব্য রাখেন কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানা, ইঞ্জি. লায়ন মো. জাবেদ আবছার চৌধুরী, জেনারেল সেক্রেটারী মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজাদ, জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারী ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর, ট্রেজারার অধ্যক্ষ লায়ন মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, মেডিকেল কলেজের এডভাইজার প্রফেসর এ এস এম মোস্তাক আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল প্রফেসর অসীম কুমার বড়ুয়া, পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নূরুল হক, নিওনেটলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. ওয়াজির আহমেদ, আজীবন সদস্য ডা. সারোয়ার আলম, সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর আবুল হাসেম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনষ্টিটিউট, নার্সিং কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীরা। এতে উপস্থাপনা করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাহিম হাসান রেজা।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের প্রতিষ্ঠান। এই হাসপাতালের সাথে আমি অনেকদিন ধরে সম্পৃক্ত আছি। বাংলাদেশে বেসরকারী খাতে চিকিৎসা সেবা ও চিকিৎসা শিক্ষায় এই প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। হাসপাতালের বিশেষায়িত চিকিৎসা সমূহ অত্যন্ত মানসম্পন্ন। বিশেষকরে আপনার যে ক্যান্সার ইনষ্টিটিউট করেছেন এধরনের প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে আর নেই। চট্টগ্রামের বাহিরেও এত সুন্দর ব্যবস্থাপনায় ক্যান্সার হাসপাতাল আছে কিনা আমার সন্দেহ। আজকের এই চমৎকার আয়োজনের জন্য তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে প্রফেসর ডা. মাহমুদ আহমেদ চৌধুরী আরজুকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরো বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রফেসর ডা. এ এফ এম ইউসুফ, ইঞ্জি. এল কে সিদ্দিকী, প্রফেসর এ এস এম ফজলুল করিম, প্রফেসর ডা. এম নূর-উন নবী, প্রফেসর ডা. নুরজাহান ভ’ঁইয়া, প্রফেসর এম এ তাহের খানসহ অনেকের অবদান রয়েছে। আমি তাঁদের অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। মেয়র বলেন, বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ১ লক্ষ ১টাকা প্রতিকি মূল্যে এই হাসপাতালের জন্য ৪.২৩৬৭ একর জমি বন্দেবস্তী প্রদান করেন। সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীরও এই হাসপাতালের জন্য এবং হাসপাতালের জমি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক অবদান রাখেন তিনি তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।
মেয়র বলেন, আমি চট্টগ্রাম নগরীকে একটি ক্লিন সিটি, গ্রীন সিটি ও হেলদি সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভ’মিকা পালন করলে এটি সম্ভব। আমি চাইল্ড স্কুল হেলথ প্রোগ্রাম চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। এর মাধ্যমে শিশুদের সচেতন করে তাদের মাধ্যমে তাদের পিতা-মাতা ও পরিবারের লোকজনকে সচেতন করার উদ্যোগ নেয়া হবে। আমাদের অসচেতনতার জন্য নগরীর খাল-বিল, নালা-নর্দমা সব ভরাট হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। এই শহর আমার আপনার সকলের। শহরকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। আমরা চাই মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, বৈষম্যহীন একটি নিরাপদ শহর। তিনি হোল্ডিং ট্যাক্স যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের বিষয়ে সভাকে অবহিত করেন। এ ব্যাপারেও তিনি সবার সহযোগীতা চান। তিনি হাসপাতালের পাশে সিটি কর্পোরেশনের পার্কটিকে খেলার মাঠ হিসেবে জুলাই ছাত্র আন্দোলনে প্রথম শহীদ ওয়াসিমের নামে নামকরণ করার ঘোষণা দেন।
মেয়র হাসপাতালের নবনির্মিত শিশু স্বাস্থ্য বহির্বিভাগ ও এএমইউ উদ্বোধন করেন এবং অটিজম ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এই মাঠে মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাও খেলাধুলা করতে পারবে।
জেএন/এমআর