সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসের জামিনের জন্য আইনী লড়ায়ের লক্ষ্যে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে চিন্ময়ের মামলার শুনানি, নথি উপস্থাপন ও জামিন শুনানির অগ্রগতিসহ তিনটি দরখাস্ত দিয়েছিলেন বিজ্ঞ এ আইনজীবী।
তবে ওকালতনামা না থাকায় আদালত সব দরখাস্ত নামঞ্জুর করেছেন। বিচারক সাইফুল ইসলাম উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানিতে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে ঢাকা থেকে আইনজীবী এসেছেন। তিনি আদালতে তিনটি দরখাস্ত দিয়েছিলেন।
তবে আসামির পক্ষে ওকালতনামা,ফাইলিং আইনজীবীর লিখিত অনুমতি না থাকায় এবং তার সাথে চট্টগ্রাম বারের কোনো আইনজীবী না থাকায় আদালত তার দরখাস্ত নট মেইন্টেইনেবল বলে নামঞ্জুর করেছেন।
যেকোনো পিটিশন দায়েরের জন্য চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এমন কারোর ওকালতনামা লাগবে, যোগ করেন তিনি।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে বলা হয়েছিলো চিন্ময়ের পক্ষে বাহিরের কোন আইনজীবী অংশগ্রহণে কোন বাধা নেই।
চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে জনসভার পর গেল ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়, সেখানে চিন্ময় দাসকেও আসামি করা হয়।
মামলা হওয়ার এক মাসের মাথায় ২৫ নভেম্বর বিকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর প্রতিবাদে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, খুলনা, দিনাজপুর, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে।
চিন্ময় দাশকে সেদিন রাতেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নেয়া হয়। পরদিন আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয় কারাগারে। ২৬ নভেম্বর আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছে। ওই তিন মামলায় মোট ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো মোট ১৪শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাত আরো ১৫/১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পাশাপাশি আলিফের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে যানবাহন ভাঙচুর ও জনসাধারণের ওপর হামলার ঘটনায় ১১৬ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন নগরীর কোতোয়ালি থানায়।
এসব মামলায় এ পর্যন্ত ৩৯ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। খানে আলমের মামলায় চিন্ময় দাসের পক্ষে আদালতে আইনি লড়াইয়ে সহায়তাকারী সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রায় ৭০ জন আইনজীবীকে আসামি করা হয়। ফলে, কোনো আইনজীবী আর চিন্ময় দাসের পক্ষে মামলায় শুনানিতে অংশ নেয়নি।
পরে গত ৩ ডিসেম্বর ফের জামিন শুনানি হলে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ চিন্ময় কৃষ্ণের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় শুনানি পিছিয়ে আগামী ২ জানুয়ারি দিন ধার্য্য করেন।
জেএন/পিআর