টানা ছয় ম্যাচ হারের পর জয়ের দেখা পেল ঢাকা ক্যাপিটালস। দুর্বার রাজশাহীকে ১৪৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে এবারের বিপিএলে জয় পেল থিসারা পেরেরার দল।
রোববার (১২ জানুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের ১৮তম ম্যাচে লিটন দাস আর তানজিদ তামিমের জোড়া শতকে শাকিব খানের দল গড়ে রেকর্ড ২৫৪ রানের সংগ্রহ।
বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা রাজশাহীকে জিততে হলে তাই রেকর্ডই গড়তে হতো। তবে তা আর হলো কোথায়। উল্টো অসহায় আত্মসমর্পণ করলো এনামুল হক বিজয়ের দল।
বিপিএলের ১১ আসরের মধ্যে এটিই কোনো দলের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। পরে ২৫৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে দুর্বার রাজশাহী।
প্রথম ওভারেই মোহাম্মদ হারিস শূন্য রানে আউট হয়ে যান। অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় শূন্য রানে আউট হন প্রথম বলেই। সাব্বির হোসাইন ১১ রান করে আউট হয়ে যান।
১৭ রান করে আউট হন ইয়াসির আলী রাব্বি। আকবর আলি বিদায় নেন ১ রান। এসএম মেহেরব আউট হয়ে যান ৪ রান করে। সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন রায়ান বার্ল। ৩২ বলে ৯ বাউন্ডারিতে এই ইনিংস সাজান তিনি।
সোহাগ গাজী আউট হয়ে যান শূন্য রানে। ১১ রানে আউট হন সানজামুল ইসলাম। তাসকিন আহমেদ ৯ রান করে আউ হন। শূন্য রানআউট হন শফিউল ইসলাম।
ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে আবু জায়েদ রাহী, মুকিদুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন এবং ফারমানুল্লাহ ২টি করে উইকেট নেন। ১টি উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিমের বিস্ফোরক ইনিংসে ভর করে ১ উইকেট হারিয়ে ২৫৪ রান করে ঢাকা ক্যাপিটালস।
১০৮ রান করে আউট হন তানজিদ হাসান তামিম, ১২৫ রানে লিটন দাস অপরাজিত থাকেন। ২৪১ রানের জুটি গড়েন তানজিদ তামিম এবং লিটন দাস।
ম্যাচের শুরুতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাস আর তানজিদ তামিম মিলে ব্যাট হাতে রেকর্ডের পর রেকর্ড জন্ম দিয়েছেন।
দূর্বার রাজশাহীর বোলারদের বেদড়ক পিটিয়ে প্রায় পুরোটা ইনিংস খেলে দেন তারা দুজন। এই দুজনের জোড়া সেঞ্চুরিতে ওপেনিং জুটিতে ওঠে ২৪১ রান।
এর মধ্যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য ঘোষিত ১৫ সদস্যের দলে জায়গা না পাওয়া লিটন দাস লিটন দাস মাত্র ৪৪ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বিপিএল ইতিহাসে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে রেকর্ড গড়েছেন।
তিনি ৫৫ বলে ১২৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ১০টি চার ও ৯টি ছয়খচিত এই ইনিংস বিপিএল ইতিহাসের সেরা ইনিংসগুলোর তালিকার ওপরের দিকেই থাকবে।
লিটনের সঙ্গে তানজিদ হাসান তামিমও দুর্দান্ত ব্যাটিং প্রদর্শন করেন। তামিম ৬২ বলে সেঞ্চুরি করেন, ইনিংসের মাত্র ৩ বল বাকি থাকতে ৬৪ বলে ১০৮ রানে আউট হন। যাতে ছিল ৬টি চার ও ৮টি ছক্কা।
বিপিএলে এক ইনিংসে দুই ওপেনারের সেঞ্চুরি এই প্রথম। উদ্বোধনী জুটিতে নতুন রেকর্ডও গড়েছেন লিটন–তানজিদ। তাদের জুটিতে ঢাকা ক্যাপিটালস ২০ ওভার শেষে এক উইকেট হারিয়ে ২৫৪ রান সংগ্রহ করে।
বিপিএলের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ রানের সংগ্রহের রেকর্ড। এরপর লিটন দাসের সঙ্গে উইকেটে এসে ২ বলে ৭ রান করেন সাব্বির রহমান।
এর আগে বিপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড ছিল রংপুর রাইডার্সের দখলে। ২০১৯ আসরে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক চট্টগ্রাম ভাইকিংসের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ২৩৯ রান করেছেলি রংপুর। যা এতোদিন বিপিএলে সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল।
আর বিপিএলে সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ। ২০১২ সালে রাজশাহীর বিপক্ষে ৪০ বলে সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। তার পরেই জায়গা করে নিলেন আজ লিটন।
দ্বিতীয় অবস্থানে অবশ্য লিটনের সঙ্গেই আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তি ক্রিস গেইল। ২০১২ সালের আসরে ৪৪ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।
জেএন/পিআর