বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার বর্ণাঢ্য এক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর আসকার দিঘীর পাড় থেকে শুরু হয়ে চকবাজার মোড়ে এসে এই র্যালির সমাপ্তি ঘটে।
র্যালি পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল বলেন, “১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ছয়জনের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত ছাত্রশিবির আজ লক্ষ লক্ষ ছাত্রের আস্থার ঠিকানায় পরিণত হয়েছে।
ছাত্রশিবির নৈতিকতা সমৃদ্ধ একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মানের জন্য, ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ তৈরীর জন্য প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে কাজ করে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থান—সকল আন্দোলনে ছাত্রশিবির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে।
ভবিষ্যতেও দেশ ও জাতির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।” ২০জন শহীদের রক্তে রাঙ্গা এই চট্টগ্রামসহ ছাত্রশিবির সারাদেশে ক্যাম্পাস গুলোতে মেধা ও সততার ভিত্তিতে একটি জাতি গঠনের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মান করতে চাই।
এই জন্য ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের সভাপতি ৫দফা দাবি পেশ করেন–দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দ্রুত ছাত্রসংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। ক্যাম্পাস গুলোতে শিক্ষার সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা। প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ হল গুলো খুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্ধ দিতে হবে।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বহিরাগত ও সন্ত্রাসীদের মহড়া বন্ধ করা এবং কুরআন-সুন্নাহর আলোকে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাজানো।
এদিকে নয়াবাজার বিশ্বরোড থেকে বড়পোল মোড় পর্যন্ত এই র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন রনি বলেন, ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থান— সকল আন্দোলনে ছাত্রশিবির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছে। ভবিষ্যতেও দেশ ও জাতির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।”
তিনি আরও বলেন,প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ইসলামবিরোধী শক্তি ছাত্রশিবিরের বিরোধিতায় লিপ্ত রয়েছে। যুগে যুগে যারাই ছাত্রশিবিরকে দমন করতে চেয়েছে, কালের আবর্তে তারাই আজ নিশ্চিহ্ন হয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
২০১৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণে আমাদের চারজন ভাই শাহাদাত বরণ করেছেন। যদি প্রয়োজন হয়, ছাত্রশিবির আরও অগণিত শহীদের নজরানা পেশ করতে প্রস্তুত আছে।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিগত শাসনামলে আওয়ামী লীগকে একটি ধর্মে পরিণত করা হয়েছিল, মুজিব ছিল সেই ধর্মের অঘোষিত নবী। ২০২৪ সালের ছাত্রজনতা এই মুজিববাদী ধর্মের মূলোৎপাটন করেছে। বাংলাদেশে এই ‘আওয়ামী ধর্ম’ আর কখনো প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না।
র্যালিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখার সেক্রেটারি মাইমুনুল ইসলাম মামুন, ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সেক্রেটারি মুমিনুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক খুররম মুরাদসহ অন্যান্য দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ।
জেএন/পিআর