চট্টগ্রাম কাস্টমস্ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদ (২০২৫-২০২৭) এর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আজ রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) আগ্রাবাদস্থ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান নির্বাচন কমিশনার আলহাজ্ব মোহাম্মদ শরিফ।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন সকল ধরণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ২৯টি পদের বিপরীতে ৫৯ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ফেব্রুয়ারি ৩০ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করায় ২৯টি পদের বিপরীতে সকলকেই বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। তিনি নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান এবং প্রত্যাশা রাখেন নতুন পরিষদ গতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে এসোসিয়েশনকে আরো সমৃদ্ধ ও সদস্য কল্যাণমুখী করতে নিরন্তর কাজ করে যাবেন। অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার আলহাজ্ব মোহাম্মদ হানিফ নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনায় যাঁরা সহযোগিতা করেছেন তাদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা দেন। নতুন পরিষদ সামনের চ্যালেঞ্জিং পথ অত্যন্ত দৃঢ়তা ও যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে অতিক্রম করবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিদায়ী সভাপতি হিসেবে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ নুরুল আবছার জুলাই ছাত্র-জনতা বিপ্লবে যাঁরা নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দেশের নতুন স্বাধীনতা এনেছেন, বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান জানান।
নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মোঃ শওকত আলী বলেন, এসোসিয়েশনের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন নিয়ে অনেকে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে দেশের পট পরিবর্তনের পর অনেক ব্যবসায়িক সংগঠনে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু অন-চ্যাসিস ডেলিভারীর আন্ডারটেকিং এ স্বাক্ষর সহ সিএন্ডএফ এজেন্টদের প্রাত্যহিক কাজে এসোসিয়েশনের সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তাই আমরা আমাদের এসোসিয়েশনে প্রশাসক নিয়োগ করতে বর্তমান নির্বাচিত পরিষদ সকল নির্বাচনি পরিষদের সমন্বয়ে যোগ্য নেতাদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে। তাই ৫৯ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেও সকল পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনাক্রমে যোগ্য ও গতিশীল নেতৃত্ব গঠনের লক্ষ্যে ৩০ জন প্রার্থী তাঁদের নাম প্রত্যাহার করেন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচিত পরিষদের জবাবদিহিতা স্থাপনের জন্য পুনরায় প্রশ্নোত্তর পর্ব চালু করাসহ আগামী ১০০ দিন কার্যপরিষদ কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রম সকল সদস্যদের নিকট তুলে ধরা হবে।
নবনির্বাচিত সভাপতি এস এম সাইফুল আলম বলেন, ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে জারীকৃত সিএন্ডএফ স্বার্থ বিরোধী সকল কালো আইন বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যেন কেউ একবারের বেশি থাকতে না পারে সেজন্য এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হবে। কোন অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
আমন্ত্রিত অতিথিদেরে মধ্যে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন ও ঢাকা কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান নতুন পরিষদকে তাদের ভবিষ্যতে গৃহীত সকল সদস্যবান্ধব কার্যক্রমে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং ফেডারেশনের মাধ্যমে দেশের সকল সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের নিয়ে লাইসেন্সিং বিধিমালা সহ সকল কালো আইনের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ গিয়াস উদ্দিন বলেন, এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র যুগপোযোগী করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হবে। জুলাই আন্দোলনে আহত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে মোঃ শাহেদ বলেন, নিজের ও পরিবারের কথা না ভেবে ফ্যাসিবাদ মুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা যারা আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছি, বাংলাদেশের মানুষ যেন তাদের না ভুলে। তিনি ফ্যাসিবাদ সরকারের জারীকৃত সিএন্ডএফ ব্যবসা সংশ্লিষ্ট সকল কালো আইন বাতিলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এসোসিয়েশনের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা মন্ডলী, নির্বাচন কমিশনারবৃন্দ ও বিদায়ী কার্যনির্বাহী পরিষদকে ক্রেষ্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, এসোসিয়েশনের প্রাক্তন ও বর্তমান উপদেষ্টা, শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ সহ প্রায় ছয় শতাধিক সিএন্ডএফ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
জেএন/এমআর