ধর্মীয় সংগঠন ইসকন নিয়ে ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরের হাজারী গলিতে যৌথবাহিনীর ওপর হামলার মামলায় ডা. কথক দাশকে ফের তিনদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী শরিফুল ইসলাম শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
ডা. কথক দাশ একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ। তিনি লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতালের মাইক্রো, লেজার ও ফ্যাকো সার্জন এবং বাংলাদেশ আই হসপিটালের কনসালটেন্ট। এছাড়াও সনাতন ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তিনি। ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারী হিসেবেও তিনি পরিচিত।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, হাজারী গলি মিয়া শপিং সেন্টার নামের একটি মার্কেটের একটি দোকানের মালিক ওসমান মোল্লা ফেসবুকে হিন্দুদের ধর্মীয় সংগঠন ইসকনকে নিয়ে ‘ব্যাঙ্গাত্মক’ পোস্ট করেন। তা নিয়ে গত বছরের ৫ নভেম্বর স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে বিক্ষুব্ধরা রাতে দল বেঁধে মার্কেটের সামনে জড়ো হয়ে দোকানটি ঘিরে ফেলে।
পরে পুলিশ গিয়ে পোস্টদাতা ওসমানকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। সে সময় তারা পুলিশকে ধাওয়া করে বলে অভিযোগ ওঠে। বিক্ষুব্ধরা সে সময় যৌথবাহিনীর সদস্যদের দিকে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে মারে এবং উপর থেকে অ্যাসিডও নিক্ষেপ করা হয়।
এ ঘটনায় পরদিন রাতে কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘হাজারী গলিতে ইসকনকে নিয়ে দেওয়া ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে যৌথবাহিনীর উপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় ডা. কথক দাশের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’
এর আগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে যুক্তরাজ্যে যাবার জন্য ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত হলে কথক দাশকে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। এরপর তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরদিন সকালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় আনা হয় কথক দাশকে।
ওইদিন নগরের নিউমার্কেট এলাকায় জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই মামলায় দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।
জেএন/এমআর