শ্রদ্ধা জানাতে চট্টগ্রামের নতুন শহীদ মিনারে জনতার ঢল

অনলাইন ডেস্ক

অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ। এ দিবস উপলক্ষে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চট্টগ্রাম নগরীর কেসি দে রোডের মুসলিম হল সংলগ্ন নবনির্মিত চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে সবস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে।

- Advertisement -

বিভিন্ন সংগঠন, নানা শ্রেণিপেশার মানুষ ফুল ও বিভিন্ন ধরনের প্লাকার্ড হাতে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকেই ভিড় করতে থাকেন নতুন এ শহীদ মিনারে। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলিতে পারি’- কালজয়ী সেই গান ছিল সমবেত অনেকের কন্ঠে। স্লোগানে-স্লোগানেও মুখর হয়ে ওঠে পুরো শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ।

- Advertisement -google news follower

পুলিশের সশস্ত্র অভিবাদনের মধ্য দিয়ে রাত ১২টা ১ মিনিটে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের পুষ্পস্তবন অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা।

এরপর চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন, সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমসহ সরকারি সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

- Advertisement -islamibank

এদিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে চার বছর পর ফের চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত হলো।

সংস্কার কাজের জন্য ২০২১ সাল থেকে এ শহিদ মিনারে সবধরনের আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ ছিল। ২০২৩ সালে কাজ শেষ হলেও নির্মাণ নিয়ে সংস্কৃতিকর্মীদের আপত্তির কারণে শহিদ মিনারের ফটক বন্ধ ছিল।

কিন্তু এবার সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন নিজে উদ্যোগ নিয়ে শহিদ মিনার ফের উন্মুক্ত করার ব্যবস্থা করেন। একইসঙ্গে সংস্কৃতিকর্মীদের আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে নতুনভাবে সংস্কারেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

শহিদ মিনার সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার পর বিপুল সংখ্যক মানুষ দলে দলে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), জেলা পরিষদ, আনসার-ভিডিপি জেলা কমান্ড্যাট কার্যালয়,বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিসসহ আরও বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।

এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৯৫২ সালে ভাষার জন্য সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারদের অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে, একাত্তরে লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা, নব্বইয়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন আর চব্বিশের ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।

এই বাংলাদেশকে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিয়ে যাব। আরেকটি বিষয়, বাংলা ভাষার চর্চাটা সীমিত হয়ে যাচ্ছে। এটা দুঃখজনক। আমরা সিটি করপোরেশন থেকে চেষ্টা করছি, আমরা যাদের ট্রেড লাইসেন্স দিচ্ছি, তারা যেন সাইনবোর্ডে বাংলা ব্যবহার করে, সেটা নিশ্চিত করতে।’

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ‘চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা এক নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমরা সবাই মিলে যেন ন্যায়ভিত্তিক সমাজ, ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে পারি, এটাই প্রত্যাশা।

বাংলা ভাষার বিকৃতি হচ্ছে, এফএম রেডিওসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলা-ইংরেজি মিলিয়ে একটি জগাখিচুড়ি অবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এই বিকৃতি সবাই মিলে রোধ করতে হবে।’

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM