ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশ পাওয়া ছয় হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র জারি, যোগদান ও পদায়নের বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সোমবার বিকেলে এক আদেশে অধিদপ্তরকে এই নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। আজ মঙ্গলবার নিয়োগপত্র জারি এবং ১২ মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তাঁদের যোগদানের ব্যবস্থা করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হযেছে।
এর আগে সোমবার সকালে সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ এই প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদেশে, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলেরও (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ছয় হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগে বাধা কেটে যায়।
আদালতে লিভ টু আপিলের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রমুখ। রিটকারী ১৫৪ জনরে পক্ষে ছিলেন সাবেক বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন। আদেশের পর শিক্ষকদের পক্ষে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে এর বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের অনুমতি দিয়েছেন। ফলে নিয়োগ পরীক্ষায় উর্ত্তীণদের সহকারি শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকছে না।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জন সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল করে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মেধার ভিত্তিতে নতুন করে এ নিয়োগ সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই রায়ের পর থেকে নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা কর্মসূচি পালন করেছে। অন্যদিকে ওই রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই আপিল শুনানির জন্য ২ মার্চ দিন ধার্য করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার শুনানি নিয়ে আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
২০২৩ সালের ১৪ জুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করে গত ৩১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। নির্বাচিত প্রার্থীদের অনুকূলে ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যু করার কথা ছিল। কিন্তু ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা সংক্রান্ত গত ২৩ জুলাই প্রকাশিত গেজেট অনুসরণ না করার অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগবঞ্চিতদের পক্ষে হাইকোর্টে পৃথক রিট দায়ের করা হয়।
জেএন/এমআর