বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা দাওয়াহ্ সংগঠন “মিনার”-এর উদ্যোগে পবিত্র রমজান উপলক্ষে গণ ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে ২০ দিনব্যাপী দারসুল কুরআন ও গণ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম রমজান থেকে শুরু হওয়া এ আয়োজনে প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২২০০-২৫০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন।
ছেলেদের জন্য কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গন এবং মেয়েদের জন্য ছাত্রী হল সমূহে এই আয়োজন চলছে। প্রতিদিন প্রায় ১৮০০-২০০০ ছেলে এবং ৫০০-৭০০ জন ছাত্রীর উপস্থিতিতে ক্যাম্পাসের এই ইফতার আয়োজন সাড়া ফেলেছে গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে।
গণ ইফতার ক্যাম্পাসে জুড়েই সৃষ্টি করছে উৎসবের আমেজ। শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ জিসান বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এধরনের আয়োজন এবারই প্রথম।
এ ধরনের আয়োজন তাদের রমজানের তাৎপর্য অনুধাবন ও ইসলামের মৌলিক শিক্ষার সাথে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
কুরআনের আলোকে জীবনের সঠিক দিকনির্দেশনা পাওয়ার পাশাপাশি সম্মিলিত ইফতার আয়োজন তাদের ভ্রাতৃত্ববোধের চেতনাকে আরও সুসংহত করছে।
প্রতিদিন ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে পবিত্র কোরআনের আলোকে দারসুল কুরআন পেশ করা হয়, যেখানে ইসলামের মৌলিক শিক্ষাসমূহ, নৈতিকতা, আত্মশুদ্ধি ও সমাজ জীবনে কুরআনের প্রয়োগ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
দারসে বিশিষ্ট আলেমগণ ও ইসলামী চিন্তাবিদগণ বক্তব্য রাখেন, যা শিক্ষার্থীদের কুরআনের শিক্ষা গ্রহণে অনুপ্রাণিত করছে।
ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি এবং মিনারের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইব্রাহীম জানান, রমজানের তাৎপর্য ও কুরআনের শিক্ষাকে ছাত্রসমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এবং ইসলামের সুমহান বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এই গণ ইফতারের আয়োজন করা হয়।
ইসলামী জ্ঞানের আলোকে একজন শিক্ষার্থী যেন নিজেকে গড়ে তুলতে পারে, সে লক্ষ্যেই এই দারসুল কুরআন আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি, সম্মিলিত ইফতারের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।
মিনারের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, পুরো রমজান মাস জুড়ে তারা শিক্ষার্থীদের জন্য কুরআনের জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা ও আত্মশুদ্ধির দীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এ আয়োজন ইসলামের মহান আদর্শ প্রচারে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে তারা আশাবাদী।
ইফতার মাহফিলের বিশাল আয়োজনের খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক সাঈদ বিন হাবিব বলেন, আমাদের আয়ের সিংহ ভাগ আসে আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুদানের মাধ্যমে। এর বাইরেও আমাদের বর্তমান জনশক্তি, সাবেক ভাইয়েরা আমাদের যে অর্থ সহায়তা দিচ্ছেন তা দিয়েই মূলত এই ইফতার আয়োজন। তাছাড়া ছাত্রশিবিরের আয়ের আরেকটি মাধ্যম হচ্ছে ছাত্রশিবির প্রকাশিত প্রকাশনা সামগ্রীর মুনাফা।
ছাত্রশিবিরের এই গণ ইফতার আয়োজন চলবে ২০ রমজান পর্যন্ত। এছাড়া ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে প্রতিটি হল, অনুষদ এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে ইফতার আয়োজন করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির।
জেএন/পিআর