বড় যত্ন করে সড়কের দুই পাশে তৈরি করা হয়েছিল ফুটপাত। রাস্তায় চলবে গাড়ি, ফুটপাতে পথচারী। ‘ভাসমান’ ব্যবসায়ীদের পথচারীদের এই ‘সুখ’ সইল না। সুপরিসর ফুটপাতের পুরোটাজুড়েই তারা গড়ে তুলেছেন ‘ফার্নিচারের শোরুম’! একটি-দুটি নয়, ডবলমুরিংয়ের পুরো দেড় কিলোমিটার সড়কের ফুটপাতে এখন গড়ে উঠেছে সারি সারি আসবাবের দোকান। সরেজমিন ঘুরে এসে বিস্তারিত জানাচ্ছেন জয়নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক রুবেল দাশ।
নগরের ডবলমুরিং থানার মনসুরাবাদ পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে ঈদগাহ মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার ফুটপাত দখল করে নিয়েছেন আসবাব বিক্রেতারা। তারা ফুটপাতের উপরেই নির্মাণ করছেন আসবাবপত্র, আবার বিক্রি করছেন সেখানেই। ফলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও পথচারীদের হাঁটতে হচ্ছে মূল সড়ক দিয়ে। যে কারণে সড়কজুড়ে প্রতিদিন সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, মনসুরাবাদ পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে দুই পাশের ফুটপাতগুলোতে পথচারীদের হাঁটার কোন জায়গা নেই। ফুটপাতের উপরই বিভিন্ন আসবাব তৈরি করে সেখানেই সেগুলো বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। কাঠের খাট, সোফা, ড্রেসিং টেবিলসহ সব ধরনের আসবাব তৈরি হচ্ছে সেখানে। আবার কিছু দোকানে অন্য জায়গা থেকে আসবাব তৈরি করে এনে ফুটপাতের উপর রেখে বিক্রি করা হচ্ছে। দোকানের উপরে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে শামিয়ানা। আবার ফুটপাতের উপরই চলছে আসবাব রঙ ও মেরামতের কাজ।
আসবাব বিক্রেতা রশিদুল হাসান জয়নিউজকে বলেন, “অনেক দিন ধরেই এখানে ফার্নিচার বিক্রি করছি। এখানে বসার জন্য এলাকার প্রভাবশালী ছেলে-পেলেদের টাকা দিতে হয়। দৈনিক ৫০ টাকা করে দিতে হয় তাদের। তাই কোন সমস্যা হয় না।”
আরেক আসবাব বিক্রেতা মো. ফখরুল বলেন, “বড় দোকান নিয়ে ব্যবসা করার মত সামর্থ্য নেই। তাই এখানেই বিক্রি করছি।”
তবে এভাবে ফুটপাতের উপর আসবাব বিক্রি করায় ক্ষুব্ধ পথচারীরা। ফুটপাতে সারি সারি আসবাবের কারণে তাদের এখন হাঁটতে হচ্ছে সড়ক দিয়ে। এতে যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক চম্পা বড়ুয়া জয়নিউজকে বলেন, “প্রতিদিন মেয়েকে নিয়ে এ পথ দিয়ে স্কুলে যাই-আসি। কিন্তু খাট-সোফা সাজিয়ে রাখায় ফুটপাত দিয়ে হাঁটার জো নেই। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর হাঁটতে হয়। তিন দিন আগে সড়কে হাঁটতে গিয়ে একবার রিকশায় ধাক্কা খেয়েছিলাম। এভাবে আর কতদিন রাস্তায় হাঁটতে হবে আমাদের জানা নেই।”
এলাকার বাসিন্দা শহিদুল সুমন জয়নিউজকে বলেন, “যখন জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কোন আন্তর্জাতিক খেলা হয় তখন ফুটপাত পরিষ্কার করে ফেলা হয়। তখন এখানে কেউ দোকান করতে পারে না। যখনই খেলা শেষ হয় তখন আবার ফার্নিচারের দোকান বসে যায়। এসব দোকানের জন্য সারাদিনই এ সড়কে যানজট লেগে থাকে।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আক্তার জয়নিউজকে বলেন, “ফুটপাতের উপর কোন অবস্থাতেই দোকান বসানো যাবে না। যদি মনসুরাবাদ এলাকায় ফুটপাতে দোকান বসে থাকে, তাহলে শিগগিরই সেখানে অভিযান চালানো হবে।”