অভিযোগ স্থানীয় খামারিদের

ডিএপি সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যের পানি খেয়ে ৩ মহিষের মৃত্যু!

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়া এলাকায় ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (ডিএপিএফসিএল) সার কারখানার পেছনে বসুন্ধরা চরের গোবাদিয়া খালের পাশে ৩ মহিষের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

- Advertisement -

স্থানীয় খামারিরা অভিযোগ করে বলেন, রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া কারখানা থেকে বিষাক্ত বর্জ্য খালে ফেলা হয়। ওই বর্জ্য মিশ্রিত পানি খেয়ে অবলা প্রাণিগুলোর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

- Advertisement -google news follower

তাছাড়া ওই পানি খেয়ে আরও বেশ কয়েকটি গবাদি পশু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে এবং নিখোঁজ রয়েছে অন্তত পাঁচটি মহিষ।

স্থানীয় খামারিরা জানান, কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা বা মাইকিং ছাড়াই কারখানার বর্জ্য পানি খালে ছেড়ে দিলে গরু-মহিষগুলো সেটি পান করে।

- Advertisement -islamibank

ক্ষতিগ্রস্ত মহিষের মালিক দক্ষিণ বন্দর কান্তিরহাট গোয়ালপাড়া এলাকার মোহাম্মদ রফিক বলেন, আমার তিনটি মহিষ মারা গেছে, দুইটি অসুস্থ। পাঁচটি মহিষ এখনও খুঁজে পাইনি।

এসব পশু পালনের ওপর রফিকের পুরো সংসার নির্ভর জানিয়ে তিনি বলেন, মারা যাওয়া তিনটি মহিষের দাম প্রায় ৪ লাখ টাকা। এক সাথে এতগুলো মহিষের মৃত্যুতে এখন আমি নিঃস্ব।

আরেক খামারি মো. ফারুকের একটি গরু মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফারুক জানান, গরুটিকে সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। চিকিৎসক জানালেন গরুটি বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম। এছাড়া রবিবার বিকেলে সার কারখানার বর্জ্য মিশ্রিত পানি খেয়ে আরও অনেকের পশু অসুস্থ হয়েছে বলে জানান খামারি ফারুক।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ডিএপি’র বর্জ্য শোধন ব্যবস্থা থাকলেও তা না করে সরাসরি খালে ফেলায় খালের পানি বিষাক্ত হয়ে যায়।যা পান করে হরহামেশাই গবাদি পশু মারা যাচ্ছে।

পূর্বেও এ ধরনের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক গরু-মহিষ মারা যাওয়ার তথ্য রয়েছে। যদিও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে কিছু ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়েছিল, তবুও এ সমস্যা সমাধানে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে স্থায়ী কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে স্থানীয় খামারিদের অভিযোগ।

তবে গত রবিবার কারখানা থেকে কোনো বিষাক্ত বর্জ্য ছাড়া হয়নি জানিয়ে ডিএপি সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, সামান্য যে বর্জ্য যায় তা খেলে পশু মারা যাওয়ার কথা নয়।

কারণ কারখানার পানিতে অ্যামোনিয়া না থাকায় কোনো গবাদি পশুর মৃত্যুর সম্ভাবনা নেই। মহিষগুলো অন্য কারণেও মারা যেতে পারে।

তিনি মৃত্যুর সত্যিকার তথ্য জানতে মৃত পশুগুলোর পোস্টমর্টেম করার পরামর্শ দিয়ে রিপোর্টে যদি প্রমাণিত হয় তাহলে ক্ষতিপূরণ দেবার আশ্বাস দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর এই ধরনের ঘটনা ঘটলেও কারখানাগুলো সময়মতো সতর্কতা না নেওয়ায় তারা বারবার ক্ষতির মুখে পড়ছেন। ক্ষতিপূরণসহ এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জোর দাবি জানান।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ