ইলিশ ধরতে আইন মানছে না বড় ফিশিং বোটগুলো। এমনিতেই শীত মৌসুমে ইলিশ একটু কম থাকে। তার উপর বড় ফিশিং বোটগুলো (লোহার বোট) মধ্যরাতে সাগরের মাঝখানে গিয়ে ইলিশ আহরণ করার ফলে ছোট বোটগুলো (কাঠের বোট) ইলিশ তেমন পাচ্ছে না। ফলে তাদের যাত্রার খরচই উঠছে না। এতে চরম অর্থকষ্টে ভুগছেন তারা।
শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে নগরের ফিশারিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ছোট বোটগুলো থেকে মাথায় টুকরি করে শ্রমিকরা ইলিশ মাছ নিয়ে তুলছেন ছোট মিনি ট্রাকে। তবে শীতের মৌসুমে ইলিশ কম পাওয়া যায় বিধায় ইলিশের যোগান অপেক্ষাকৃত কম। তাই শীতের মৌসুমে ধরা ইলিশগুলো বিক্রি করতে হয় চড়া দামে।
জানা যায়, প্রতি মণ ইলিশ বাজারের বেপারিরা কিনে নিচ্ছেন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়।
জানা যায়, সাগরে মাছ ধরার একটি ছোট বোট পাঠাতে খরচ হয় ২২ দিনে প্রায় দুই লাখ টাকা। সে অনুযায়ী মাছ পাওয়া যাচ্ছে না এমন অভিযোগ বোট মালিকদের।
এমনই এক ছোট বোটের ইনচার্জ আলী হোসেন জয়নিউজকে বলেন, একটি বোট সাগরে গেলে প্রায় ২০ থেকে ২২ দিন সময় লাগে ফিরে আসতে। সে অনুযায়ী মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, সাগরে লোহার বোটের কারণে ইলিশের মৌসুমেও খালি হাতে ফিরতে হয় কাঠের বোটের জেলেদের। আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন মাস ছিল ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু লোহার বোটের কারণে তখনো আমাদের কাঠের বোটের জেলেরা মাছ ধরতে পারেননি।
এদিকে ফিশারীঘাটের ইজারাদার আবদুর রশিদ জয়নিউজকে বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গভীর সমুদ্রে মাছ ধরবে লোহার ফিশিং বোট। কিন্তু তারা দিনের বেলায় গভীর সমুদ্রে মাছ ধরলেও মধ্য রাতে সাধারণ বোট সাগরের যেসব এলাকায় মাছ ধরে ওইসব স্থানে এসে মাছ ধরে। যে কারণে লোকসান গুনতে হচ্ছে সাধারণ জেলেদের।
এদিকে নতুন ফিশারীঘাট মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি বাবুল সরকার জয়নিউজকে বলেন, সাগরের চল্লিশ মিটারের বাইরে লোহার ফিশিংগুলো মাছ আহরণ করতে পারবে। কিন্তু তারা আইন অমান্য করে ১৫ থেকে ২০ মিটারের ভিতরে মাছ সংগ্রহ করায় সাধারণ জেলেরা সাগরে মাছ পাচ্ছেন কম। এর আগেও বেশ কয়েকবার আমরা তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম। কিন্তু কোন ফলাফল আসেনি। মৎস্য অধিদপ্তরের প্রতি আমরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। লোহার বোটগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
জয়নিউজ/রুবেল/জুলফিকার