৫-১০ বছরের বাচ্চারাও মোবাইলে দিব্যি সড়গড় হয়ে উঠছে। একটি চায়ের দোকানে বসে এক অভিভাবক গর্ব করে বলছিলেন,‘‘আমি নিজে স্মার্ট ফোন ঠিকমতো চালাতে পারি না। কিন্তু ছেলে সব পারে।’’ জানা গেল, ছেলের বয়স সবে দশ ছুঁয়েছে। কিন্তু অভিবাবক কখনো বুঝে উঠতে পারে না নিজের সন্তানের জন্য ভবিষ্যতে কি বিপদ অপেক্ষা করছে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শিশুরা মোবাইলে আসক্ত হলে, তাদের চোখের রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মানসিক ব্যধিও হতে পারে। লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয়ে পড়ে ছেলেমেয়েরা।
বিকল্প উপায় হিসাবে বই পড়ার অভ্যাস বাড়ানোর কথা বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। বলছেন, গান শোনা, ছবি আঁকার কথা। কোনও একটা দিকে আগ্রহ তৈরিতে ছেলেমেয়েদের উৎসাহ দেওয়ার কথা। কিন্তু সে সবে বাবামায়ের ধৈর্য লাগে, সময় লাগে। হাতের কাছে পড়ে আছে সব রোগের এক ওষুধ মোবাইল!
পশ্চিমের দুনিয়াও ইদানীং বুঝতে পারছে, ছোটদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিলে কী অবস্থা হতে পারে। কিন্তু সেই সচেতনতা বনগাঁ-হাবড়ার গ্রামে আর কতটুকু!
সম্প্রতি মাইক্রোসফট কর্তা বিল গেটস অভিভাবকদের অনুরোধ করেছেন, কোনও অবস্থাতেই তাঁরা যেন চোদ্দো বছরের সন্তানের হাতে মোবাইল তুলে না দেন। তাঁর নিজেরও ২০, ১৭, ১৪ বছরের তিন সন্তান। তাদের কেউই হাইস্কুলে ওঠার আগে মোবাইল হাতে পায়নি। গেটস জানিয়েছেন, বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালন খুব সহজ কাজ নয়। অভিভাবকেরাই ঠিক করবেন, একজন শিশুর বেড়ে ওঠা কেমন হবে। তাই শিশুর হাতে কখন মোবাইল তুলে দেবেন, কত দিন পর্যন্ত দেবেন না— সেই সিদ্ধান্ত তাঁদেরই নিতে হবে।
অভিভাবকরাও এ ক্ষেত্রে নিজের মতো যুক্তি সাজাচ্ছেন। কেউ বলেন, বাচ্চাদের হাতে যে মোবাইল দেওয়া উচিত নয়, এটা জানতেন না। কারও কারও দাবি, তাঁরা সন্তানদের হাতে মোবাইল বেশিক্ষণের জন্য দেন না। কেউ বলেন, না দিয়ে উপায় নেই। কান্নাকাটি শুরু করে, খেতে চায় না।
অভিভাবকেরা আত্মপক্ষ সমর্থনে যা-ই বলুন না কেন, এ কথা ঠিক, বাচ্চাদের হাতে মোবাইল ঘুরছেই। ফলে ক্ষতিও হচ্ছে তাদের।