রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামজুড়েও কিশোর অপরাধীদের তৎপরতা বেড়েছে। চট্টগ্রামে কৌশল বদলে নতুন রূপে সংগঠিত হচ্ছে অপরাধীরা।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, দখলবাজি, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, মারামারি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিতে আগের চেয়েও বেপরোয়া হয়ে পড়েছে কিশোররা। এমনকি খুনাখুনিতেও জড়াচ্ছে কিশোর গ্যাং।
সূত্র বলছে, চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী, খুলশী, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, হালিশহর, ডবলমুরিং, কোতোয়ালি ও আকবর শাহ থানা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন থানা এলাকায় প্রতিটি চক্রের সদস্য সংখ্যা ১৫ থেকে ৩০ জন।
স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, আগের ‘বড় ভাই’ প্রতিস্থাপন হওয়ায় অপরাধীরা নতুন কৌশলে নিজেদের ক্ষমতা বজায় রাখছে।
তথ্যাভিযানে জানা গেছে, বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় এই চক্র নিয়ন্ত্রণ করছেন সাইফুল ইসলাম ও সবুজ নামে দুজন। হালিশহরে মো. আসলাম, চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম এবং কোতোয়ালি এলাকায় মো. আবিদ কিশোর অপরাধীদের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, কেউ নারীদের গলা থেকে সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয়, কেউ তরুণীদের উত্ত্যক্তও করে। কিছু চক্র আবার রাজনৈতিক প্রভাব বা স্থানীয় প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে মারামারিতে জড়াচ্ছে। কোথাও কোথাও মোটরসাইকেল চালিয়ে আশপাশের এলাকায় দাপট দেখাচ্ছে।
পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) ২০১৯ সালে প্রথম কিশোর অপরাধীদের একটি তালিকা তৈরি করেছিল। সম্প্রতি তাদের তৎপরতা নতুন করে বাড়ায় এবং পৃষ্ঠপোষক পরিবর্তন হওয়ায় তালিকাটি হালনাগাদ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
ফলে এই অপরাধীদের তালিকা নতুন করে তৈরির কাজ শুরু করছে সিএমপি, কোথাও অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের ধরাও হচ্ছে বললেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে সামাজিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি আরো বাড়াতে হবে। বিভিন্ন জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত বৈঠকে এই অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে আড্ডা দেওয়া বন্ধ, অভিভাবকদের সচেতন ও কাউন্সেলিং করা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানোর মতামত এসেছে।
কক্সবাজারের পর্যটন শহরেও কিশোর অপরাধীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। শতাধিক চক্রের বেশির ভাগ সদস্যই রোহিঙ্গা। কলাতলী গোলচত্বর স্টেশনে অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা কিশোর-কিশোরী অবস্থান করে। রাজধানী ঢাকা থেকেও কিশোর অপরাধীরা এখানে এসে সক্রিয় হচ্ছে।
জেএন/পিআর