জাপানের ‘হেন না’ বিশ্বের প্রথম হোটেল। যেখানে হোটেল কর্মী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে ২৪৩টি রোবট। তাই এটি বিশ্বে ‘রোবট হোটেল’ নামে পরিচিত।
এই আবাসিক হোটেলে রোবটের সাহায্যে আগত অতিথিদের স্বাগত জানানো হতো ও রোবট দ্বারা প্রায় সকল কাজ করা হতো। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে জাপানের অদ্ভুত এই হোটেলটি এভাবেই পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আগাগোড়া প্রযুক্তিতে মোড়া এ হোটেলটি থেকে ২৪৩ জন রোবটের অর্ধেককেই সম্প্রতি ছাঁটাই করা হয়েছে।
মানুষের বদলে রোবট ব্যবহার করার কারণে শুরু থেকেই অসন্তুষ্ট ছিলেন হোটেল কর্মীরা। রোবট ছাড়া যেখানে প্রায় হাজার চারেক মানুষ কাজ করতে পারলেও কাজ করছে তার অর্ধেক সংখ্যক মানুষ। মানুষের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত রোবটগুলো চটকদার বিজ্ঞাপনের জন্য উপযোগী হলেও বাস্তবে সমস্যা সমাধানে তারা ততটা পারদর্শিতা দেখাতে পারেনি। অর্থাৎ সমস্যা সমাধানের চাইতে তারা নিজেরাই বেশি সমস্যার সৃষ্টি করছিল। সেই সমস্যা সমাধানে রোবটদের ছুটি দিয়ে মনুষ্য কর্মীদের নেওয়া হয়েছে হোটেলটিতে।
হোটেলের রুম সার্ভিসে ব্যবহৃত রোবটগুলো রুমের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ বা প্রাথমিক কিছু কথাবার্তা চালিয়ে যেতে পারলেও গ্রাহকদের শহরের দর্শনীয় স্থান বা পরিবেশ সংক্রান্ত জটিল প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যেত। এদিকে হোটেল কর্তৃপক্ষ রোবটদের দক্ষতার ব্যাপারে এত আত্মবিশ্বাসী ছিল যে, তারা হোটেল রুমে টেলিফোন পর্যন্ত রাখেনি।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত রোবটগুলো বিদেশি অতিথিদের পাসপোর্ট কিছুতেই চেক করতে পারছিল না। এমন অবস্থায় মনুষ্য কর্মীদের ছুটে এসে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছিল। রিসিপশনে থাকা রোবটটি সন্তুষ্ট করতে পারছিল না গ্রাহকদের। যার কারণে পরবর্তীতে একজন মানুষকে রিসিপশনে অতিথিদের স্বাগত জানাতে রাখা হয়েছে।
রোবটদের নিয়ে সৃজনশীল কাজ করিয়ে যে চমক দিতে চেয়েছিল ‘হেন না’ হোটেল কর্তৃপক্ষ তা রোবটদের নির্বোধ আচরণে দিনকে দিন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল। সে কারণে এত সংখ্যক রোবটকে কাজ থেকে বাদ পড়তে হয়েছে। তবে হোটেলটিতে রোবটের ব্যবহার কিন্তু একেবারে বন্ধ হচ্ছে না। হালকা কাজে বাকি রোবটগুলো ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে আরো উন্নত রোবটিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষের।