দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান (দুদক) ইকবাল মাহমুদ চট্টগ্রাম মহানগরের অধিকাংশ বিদ্যালয়ে আকস্মিক পরিদর্শন করেছেন।
রোববার (২৭ জানুয়ারি) সকালে ৮টা ২৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছে নগরের অধিকাংশ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন তিনি। পরে দুদক চেয়ারম্যান সকাল ৯টা ১৫ মিনিটেই হাজির হন নগরের কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলের সময়ে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের বাইরে দেখে বিস্মিত দুদক চেয়ারম্যান তখনই ঢুকে পড়েন প্রতিষ্ঠানটিতে। সেখানে তিনি দেখেন, স্কুলের আটজন শিক্ষকের মধ্যে একমাত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উপস্থিত, বাকি সাতজন শিক্ষকই অনুপস্থিত। ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের আশে-পাশে আচার-চানাচুর খেয়ে অলস সময় পার করছে।
পরিদর্শন শেষে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন,‘বিভিন্ন জেলায় সারপ্রাইজ ভিজিটের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে এই ভিজিট করা হচ্ছে। নগরের অধিকাংশ বিদ্যালয়গুলোতে বেশিরভাগ শিক্ষককেই অনুপস্থিত পেয়েছি ।
কমিশনার বলেন, আমাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কাউকেই ছিনিমিনি খেলত দেওয়া হবে না। যে কোনো মূল্যে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে দুদক দণ্ডবিধির ১৬৬ ধারা প্রয়োগ করবে। তারপরও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতিসাধন করবেন বা করার চেষ্টা করবেন এমন কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
এর পরপরই দুদক চেয়ারম্যান যান নগরীর ভাটিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে দেখেন ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ জন শিক্ষক অনুপস্থিত। এদের অনুপস্থিতির কারণ স্কুল কর্তৃপক্ষ দুদক চেয়ারম্যান জানাতে পারেননি। দুদক চেয়ারম্যান ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি শিট পরীক্ষা করে দেখেন, গতকাল যে সকল শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল তাদের অনেককেই উপস্থিত দেখানো হয়েছে। আবার আজ বেলা ১০ টা পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের রোল কল করা হয়নি। এ বিষয়েও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
এরপর দুদক চেয়ারম্যান আকস্মিক পরিদর্শনের যান নগরীর শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করা কোনো শিক্ষার্থীকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় সুযোগ (সেন্ট-আপ) দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি অবহিত হয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন দুদক চেয়ারম্যান। তবে নবম শ্রেণিতে এক বা একাধিক বিষয়ে ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীদের দুই হাজার টাকার বিনিময়ে দশম শ্রেণিতে প্রোমোশন দেওয়ার বিষয়ে জানতে পারেন।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, এটা অনৈতিক। শিক্ষাক্ষেত্রে অনৈতিকতার কোনো স্থান থাকতে পারে না।
এসময় অভিভাবকরা দুদক চেয়ারম্যানকে কাছে পেয়ে তাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন।