ফাইনালের মহারণের জন্য প্রস্তুত বিপিএলের মঞ্চ। ৫ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই টুনামেন্টের পর্দা নামছে শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মাঠের শেষ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। দুই প্রতিপক্ষ ঢাকা ডায়নামাইটস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বিশ্বমানের অলরাউন্ডারদের মুখোমুখী এই লড়াই মাঠে বসে উপভোগ করবেন আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর।
শুক্রবার মিরপুরের শের ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে বিপিএলের ফাইনাল দ্বৈরথ।
ঢাকার নেতৃত্বে আছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। অন্যদিকে কুমিল্লার নেতা ইমরুল কায়েস পাশে পাচ্ছেন দেশের সেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালকে। বিপিএলের ফাইনালে এর আগেও খেলেছেন সাকিব-ইমরুল। তবে এই প্রথম এই প্রতিযোগিতার ফাইনালে মাঠে নামবেন তামিম। তাই রোমাঞ্চটা তার বেশিই। তামিম কি পারবেন কুমিল্লাকে দ্বিতীয় শিরোপার স্বাদ পাইয়ে দিতে? নাকি ঢাকার মাথায় চতুর্থবারের মত উঠবে বিপিএল শিরোপার মুকুট? আজ (শুক্রবার) রাতেই মিলবে এই প্রশ্নের উত্তর।
বিপিএলের এই ফাইনালে লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। ফাইনালের দুই দলের রণনীতি সাজাবেন দেশসেরা দুই কোচ। ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন আর কুমিল্লার কোচ মো. সালাউদ্দিন। দুই কোচেরই রয়েছে শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা। যদিও দুই কোচই এগিয়ে রাখছেন অন্য দলকে।
নিজেদের দলকে আন্ডারডগ উল্লেখ করে কুমিল্লাকেই এগিয়ে রাখছেন ‘চাচা’ খ্যাত ঢাকার কোচ সুজন। তিনি বলেন, ‘নিজেদেরকে আন্ডারডগ ভাবছি। আমার চোখে ফাইনালের ফেভারিট কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। কারণ, রাউন্ড রবিন লিগের দুই পর্বের ম্যাচে একবারও কুমিল্লার সঙ্গে জিততে পারিনি। যেহেতু এই আসরে আগের দুইবারের মোকাবেলায় আমরা জিততে পারিনি একবারও, তাই আমার মনে হয় ফাইনালে কুমিল্লা ফেভারিট আর আমরা আন্ডারডগ।’
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ সালাউদ্দিন বলেন, ‘আপনি যতই বলেন চাপ নেব না, সবকিছু ঠিক আছে, ব্যাপারটা কখনোই এমন থাকে না। মাঠে প্রবেশ করলেই সবকিছু পাল্টে যায়। ঢাকার অনেকগুলো ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আছে। আমাদের নেই। ঢাকা জানে কিভাবে চাপ সামাল দিতে হয়। এখানেই তাদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য। আমাদের দলের বেশিরভাগ খেলোযাড়ই তরুণ। তবে তাদের মাঠে যুদ্ধ করার মানসিকতা রয়েছে।’
অন্যদিকে ফাইনালে লড়াই জমবে জাতীয় দলের দুই বন্ধু সাকিব-তামিমের মধ্যেও। যদিও ব্যাট হাতে এখনো পর্যন্ত সাকিবের চেয়ে এগিয়েই রয়েছেন তামিম। ১৩ ম্যাচে খেলে প্রায় ২৮ গড়ে ২টি ফিফটিসহ আসরের পঞ্চম সর্বোচ্চ ৩২৬ রান করেছেন তামিম। অন্যদিকে ১৪ ম্যাচ খেলে ২২ গড়ে সাকিব করেছেন ২৯৮ রান, তারও রয়েছে ২টি ফিফটি। সাকিব এগিয়ে তার বোলিং শক্তি নিয়ে। ২২ উইকেট নিয়ে তাসকিনের সঙ্গে আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের তালিকায় আছেন শীর্ষে।
ফাইনালে মূলত লড়াই হবে দুই দলের অলরাউন্ডারদের মধ্যে। নিজেদের দিনে যারাই জ্বলে উঠবেন তারা হয়ে উঠবেন ম্যাচের নিয়ন্ত্রক। যেখানে ঢাকা ডায়নামাইটসের মূল শক্তির জায়গা হলেন তিন অলরাউন্ডার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, পেস বোলিং অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল আর অফস্পিনিং অলরাউন্ডার সুনিল নারিন।
ক্যারিবীয় পেস বোলিং অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলের ব্যাট থেকে এসেছে ২৯৫ রান। উইকেট নিয়েছেন ১৪টি। ঢাকার ইনিংস গোড়াপত্তন করতে নেমে ২৭৯ রান করা নারিন অফস্পিন বোলিং দিয়ে শিকার করেছেন ১৮ উইকেটও।
প্রায় একই চিত্র কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সেরও। সেখানে পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি, শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা এবং বাংলাদেশের সাইফুদ্দীন ভালো পারফর্ম করছেন।
পেরেরা এখন পর্যন্ত ৫ উইকেট শিকারের সঙ্গে ১৫১ রান করেছেন। আফ্রিদি রান কম (১৪১) করলেও বল হাতে ১৬ উইকেট নিয়ে পুষিয়ে দিয়েছেন। আর তরুণ অলরাউন্ডার সাইফুদ্দীন দলের সর্বাধিক ১৮ উইকেট শিকারি। তাই ঢাকা আর কুমিল্লার ফাইনালে দু’দলের অলরাউন্ডাররাই গড়ে দেবেন ম্যাচের পার্থক্য।