কখনো মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা, কখনো বৃক্ষমেলা, আবার কখনো গাড়িমেলার আয়োজন করা হত সেখানে। কখনো বাঁশ, কখনো পিকআপ-মিনিট্রাক, কখনো ভ্যানগাড়ির দখলে থাকত স্থানটি। আবার টাইলসের সারিও চোখে পড়তো মাঝে মাঝে। এসবের পাশে ফুটপাতজুড়ে ছিল আবর্জনার স্তূপ। ফুটপাত থেকে সে আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ত মূল সড়কেও। নাকে রুমাল চেপে হাঁটাও দায় ছিল পথচারীদের। নগরের কাজির দেউরী আউটার স্টেডিয়াম এলাকার এমন চিত্র প্রতিদিনকার দৃশ্য ছিল নগরবাসীর কাছে।
আ জ ম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পাল্টে যেতে থাকে আউটার স্টেডিয়াম এলাকার পুরো দৃশ্যপট। নেওয়া হয় সুদূরপ্রসারী উন্নয়ন পরিকল্পনা। যার ধারাবাহিকতায় পরিবর্তনের ছোঁয়ায় পাল্টে যায় স্টেডিয়ামের আশপাশের পুরো এলাকা।
শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় নগরপিতা আ জ ম নাছির উদ্দীন আউটার স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এসময় নগরপিতা এখানকার সৌন্দর্যবর্ধনে নকশা অনুযায়ী কাজ করার পরামর্শ দেন। তিনি আউটার স্টেডিয়ামের কাজের অগ্রগতি আরো বাড়ানোর জন্য দায়িত্বরত বেসরকারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটিকে প্রয়োজনীয় নিদের্শনা দেন।
মেয়র নাছির জয়নিউজকে বলেন, পুরো স্টেডিয়ামকে নান্দনিকরূপে সাজানো হচ্ছে। চারিদিকে ফুলের বাগান করা হবে। আউটার স্টেডিয়ামের মাঠে সবুজ ঘাস লাগানো হবে। আগে ভালো ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিল না। বর্তমানে ড্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পথচারীদের হাঁটা-চলা নির্বিঘ্ন করতে দখলমুক্ত করে তৈরি হচ্ছে নান্দনিক সাজের ফুটপাত।
ইতিমধ্যে পিকআপভ্যান ও মিনিট্রাকের অস্থায়ী স্ট্যান্ড তুলে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এটিএম বুথ, যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা হবে। কিছুদিনের মধ্যে আউটার স্টেডিয়াম এলাকার চারপাশের পূর্ণাঙ্গ সৌন্দর্য দেখতে পাবেন নগরবাসী। আউটার স্টেডিয়াম এলাকা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। চসিকের ব্যবস্থাপনায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফিউশন ইঞ্জিনিয়ারিং এই সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করছে।
সুইমিং পুলের উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করে আ জ ম নাছির বলেন, আউটার স্টেডিয়ামের একপাশে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সুইমিংপুল কমপ্লেক্স। কিছুদিন আগে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। এটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলে এপ্রিলের মধ্যেই এই সুইমিংপুলের উদ্বোধন করা হবে। আগে নগরে কোথাও আন্তর্জাতিকমানের সুইমিংপুল ছিল না। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজিকেএস) তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয় এই সুইমিংপুল কমপ্লেক্স। সাঁতার প্রতিযোগিতার পাশাপাশি এই সুইমিংপুলে কিশোর-কিশোরীরা সাঁতার শিখতে পারবে। সুইমিংপুলের চারিদিকে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নানা রকমের ফুলের গাছ রোপণ করা হয়েছে।
পরিদর্শনকালে মেয়রের সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লেঃ কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, জনসংযোগ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী রায়হান ইউসুফ, রাশেদুল ইসলাম, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফিউশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কর্মকর্তারা।