মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানি বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এছাড়া টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে গবাদি পশু আমদানিও। এ অবস্থায় শঙ্কায় দিন কাটছে সীমান্ত ব্যবসায়ীদের।
টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ জানায়, চলতি বছর ২২ জানুয়ারির পর থেকে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে পশু আমদানি বন্ধ রয়েছে। যে ২২ দিন পশু আমদানি হয়েছে তাতে ৩ হাজার ৩৯১টি গরু, ৪৪০টি মহিষ আমদানি করে ১৯ লাখ ১৫ হাজার ৫শ’ টাকা রাজস্ব আদায় হয়।
এদিকে একই সময়ে টেকনাফ শুল্ক স্টেশন স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২২ কোটি ১০ লাখ টাকা। ওই মাসে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট ছিল ১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। টার্গেটের চেয়ে ৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে রাজস্বের টার্গেট পূরণ নিয়ে শঙ্কিত বলে জানায় বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী ও শাহপরীর দ্বীপ করিডোরের একাধিক পশু আমদানিকারক জয়নিউজকে বলেন, গত ২০ দিন ধরে কাঠসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি শাহপরীর দ্বীপের গবাদি পশু আমদানির করিডোরে কোনো পশু আমদানি হয়নি। তবে স্থলবন্দর ও করিডোরের স্থবিরতা কত সময় চলবে তা কেউ বলতে পারছেন না।
টেকনাফ উপজেলা পশু আমদানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুল্লাহ মনির বলেন, ‘মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে সে দেশের ব্যবসায়ীরা পশু আনা নিরাপদ মনে করছেন না। এমন শঙ্কায় সে দেশের ব্যবসায়ীরা পশু পাঠাচ্ছেন না। পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে ফের পশু আমদানি শুরু হবে বলে মনে করি।’
পশু ব্যবসায়ী সাবরাং এলাকার মো. শরীফ বলেন, দেশে গবাদি পশুর চাহিদা পূরণে মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি করা হয়। বর্তমানে সে দেশের সমস্যার ফলে পশু আসছে না। মিয়ানমার থেকে পশু না আসায় গবাদি পশুর চাহিদা ও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
টেকনাফ স্থলবন্দরের পণ্য আমদানিকারক মো. সেলিম বলেন, টেকনাফ সীমান্ত বাণিজ্যে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। মিয়ানমার থেকে প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ কাঠ আমদানি হয়। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্দরে কাঠ আমদানি বন্ধ রয়েছে।
টেকনাফ স্থল বন্দর শুল্ক কর্মকর্তা শংকর কুমার দাশ জয়নিউজকে বলেন, পশুর করিডোর থেকে সরকার প্রতি বছর কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে আসছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পশু ব্যবসায়ীদের সহায়তায় তা আদায় করা সম্ভব হচ্ছে। জানুয়ারির শেষে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে গবাদি পশু আসা বন্ধ রয়েছে। এমনকি সীমান্ত বাণিজ্যের পণ্য আমদানিতেও এর প্রভাব পড়ে। এ কারণে ফেব্রুয়ারিতে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট পূরণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।