বাংলাদেশের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে খুবই নেতিবাচক চোখে দেখা হয়। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের মানুষই অবৈধ সম্পর্কে কমবেশি জড়িয়ে পড়ে। তবে কিছু দেশ রয়েছে, সেখানে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ছড়াছড়ি। যুক্তরাজ্যের দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট সম্প্রতি এক সমীক্ষায় বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের তালিকার কথা জানিয়েছে।
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল, শীর্ষদশে যুক্তরাজ্য থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র নেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিবাহিত দম্পতিদের মধ্যে সমীক্ষাটি চালায় দ্য রিচেস্ট ও ম্যাচ ডটকম।
শীর্ষ দশটি দেশের তালিকা ও তালিকায় স্থান হওয়ার কারণ জানানো হল-
১. থাইল্যান্ড (৫৬ শতাংশ)
দেশটিতে যৌনপল্লীর সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। থাইল্যান্ডের অর্থনীতির একটি বড় আয় আসে এ খাত থেকে। থাই বিবাহিত নারী-পুরুষের মধ্যে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার হার বিশ্বের সর্বোচ্চ ৫৬ শতাংশ। থাইল্যান্ডের অনেক সমাজে পুরুষের সঙ্গে স্ত্রী ব্যতীত সম্পর্ককে খারাপ চোখে দেখা হয় না। এ ছাড়া ধনীরা স্ত্রী ব্যতীত অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে পারে।
২. ডেনমার্ক (৪৬ শতাংশ)
ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিবাহবহির্ভূত অবৈধ সম্পর্ক হয় ডেনমার্কে। অনলাইন ডেটিংয়ে বিবাহিত নারীদের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা গেছে।
৩. ইতালি (৪৫ শতাংশ)
ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রীই অবৈধ সম্পর্কের জন্য বিশ্বজুড়ে সমালোচিত। অষ্টাদশ শতাবব্দীতে অবৈধ সম্পর্কের জন্য আলোচিত ক্যাসানোভা কাহিনীয় ইতালিরই। সেই দেশের মানুষ বিশ্বতালিকায় বৈধ সম্পর্কে তৃতীয় হওয়া অতি স্বাভাবিক! কিন্তু ইতালিতে বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেশ কম।
৪. জার্মানি (৪৫ শতাংশ)
বিবাহিত সম্পর্ককে ফরাসিদের চেয়ে গুরুত্ব দেন জার্মানরা। তবে তাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্কের হারও বেশি। অবৈধ সম্পর্কের কথা স্বীকার করা ৪০ শতাংশ পুরুষ এ জন্য অনুশোচনা করেন। জার্মান নারীদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৪৩ শতাংশ।
৫. ফ্রান্স (৪৩ শতাংশ)
অধিকাংশ ফরাসি মনে করে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থাকা খারাপ কিছু নয়। ৬৩ শতাংশ ফরাসি মনে করেন, সম্পর্কের বিষয়ে সৎ না থেকেও একজনকে ভালোবাসা সম্ভব। অবৈধ সম্পর্কের বিষয় স্বীকার করে অনুশোচনা করার হার মাত্র ২৮ শতাংশ।
৬. নরওয়ে (৪১ শতাংশ)
নরওয়ের আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত অবৈধ সম্পর্কের হার পরিবর্তন হয়। গ্রীষ্মকালে অনলাইনে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের অনেক ওয়েবসাইটে গ্রাহকের সংখ্যা ৭৮ শতাংশ বেড়ে যায়। কিন্তু শীতকালে নরওয়েবাসী অবৈধ সম্পর্কের চেয়ে নিজের বাড়িতে থাকাকেই প্রাধান্য দেন।
৭. বেলজিয়াম (৪০ শতাংশ)
ফ্রান্সের মানুষের চিন্তাধারার সঙ্গে দেশটির বেশ মিল পাওয়া যায়। দেশটিতে বিবাহিত দম্পতিদের মধ্যে অনলাইট ডেটিং সাইটের বেশ জনপ্রিয়তা দেখা যায়। দেশটির একটি শীর্ষ ডেটিং সাইটে এই সংখ্যা ১০ লাখ। অর্থাৎ, দেশের জনসংখ্যার ১০ শতাংশই অবৈধ সম্পর্কে যুক্ত
৮. স্পেন (৩৯ শতাংশ)
সামাজিকভাবে অবৈধ সম্পর্ককে খারাপ দৃষ্টিতেই দেখা হয় দেশটিতে, তবুও অবেধ সম্পর্কে অষ্টম স্থানে রয়েছে দেশটি। তবে বিবাহবিচ্ছেদের হার এখানে ৬০ শতাংশ। বিচ্ছেদের আগেই অন্য সম্পর্কে যুক্ত হওয়ার কারণেই অবৈধ সম্পর্কের হার বেশি হতে পারে।
৯. যুক্তরাজ্য (৩৬ শতাংশ)
যুক্তরাজ্যবাসীর মধ্যে অবৈধ সম্পর্কের কথা স্বীকার করা অর্ধেক ব্যক্তি এজন্য অনুশোচনায় ভোগেন। এই অনুশোচনা বোধের হার ফরাসিদের দ্বিগুণ। অনেকে মনে করেন, সমীক্ষায় রাজপরিবারকে যুক্ত হলে যুক্তরাজ্যের অবস্থান আরো উপরে হতো।
১০. ফিনল্যান্ড (৩৬ শতাংশ)
২০১০ সালের পর থেকে ফিনল্যান্ডে বিবাহিতদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্কের হার দ্রুত বাড়ছে। অনেকের মতে, ফিনল্যান্ডে অনেক সময় অবৈধ সম্পর্ককে অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখা হয়। অনেক সময় সামাজিকভাবেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়।