‘চন্দ্রনাথধাম দর্শনে বহুবার আসতে চেয়েও পারিনি। অনেক দিনের স্বপ্ন। এবার ঈশ্বর সে সুযোগ করে দিয়েছেন। কয়েক কিলোমিটার পাহাড় ডিঙিয়ে চন্দ্রনাথ মন্দিরে এসে পূজা দিতে পেরে দারুণ শান্তি পেলাম। মেলায় প্রচুর ভিড়। এর মধ্যে মঠ-মন্দিরে প্রবেশ করাই কঠিন। তবুও পেরেছি। এতেই নিজেকে সার্থক মনে হচ্ছে।’
কথাগুলো বলছিলেন সিলেট থেকে আসা ষাটোর্ধ বৃদ্ধ জগদীস চন্দ্র বিশ্বাস। একই কথা তাঁর স্ত্রী রমা দেবীরও। দু’জনেই মহাতীর্থ সীতাকুণ্ডে আসতে পেরে আবেগাপ্লুত।
একইভাবে পূজা দিয়ে আত্মতৃপ্তির কথা জানালেন ঢাকা থেকে আসা মধ্যবয়সী অমরেন্দ্র দে। তিনি বলেন, ‘এখানে আসতে পারাটাই সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমি আসতে পেরেছি তাই খুব ভালো লেগেছে। এখানে ব্যাসকুণ্ডে স্নান শেষে চন্দ্রনাথ দর্শন করলাম। এবার ফেরার পথে অন্য মন্দিরগুলোতে পূজা দেব। ভবিষ্যতে পরিবারের অন্যদেরও নিয়ে আসার ইচ্ছা আছে। ’
এভাবেই মঙ্গলবার (৫ মার্চ) শিব চতুর্দশী মেলার দ্বিতীয় দিনে এসে শম্ভুনাথ-চন্দ্রনাথ- ভৈরব দেবসহ বিভিন্ন মঠ-মন্দির দর্শন করেছেন লাখ লাখ পুণ্যার্থী। সবার মধ্যেই ছিল দারুণ উচ্ছ্বাস।
জানা গেছে, মেলার প্রথম ও দ্বিতীয় দিন বিকেল পর্যন্ত অন্তত ১০ থেকে ১২ লাখ ভক্তের সমাগম ঘটেছে এ মহাতীর্থে।
পূর্ণ তিথিতে এসে পুণ্যার্থীরা ব্যাসকুণ্ডে স্নান করে পবিত্র হয়ে মঠ-মন্দিরে পূজা অর্চনা করেন। আবার কেউ কেউ পূর্ব পুরুষের আত্মার শান্তির জন্য শ্রাদ্ধ-তর্পন শেষে গয়াকুণ্ডে পিন্ড দান করে থাকেন।
পরিদর্শনকালে দেখা যায়, যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে শতবর্ষী বৃদ্ধও তীর্থভূমিতে এসে আরাধনা করছেন। এদের একটি বড় অংশ আবার দুর্গম পাহাড়ি পথ পেরিয়ে যাচ্ছেন চন্দ্রনাথ-বীরুপাক্ষ মন্দির দর্শনে।
তবে প্রবল ভিড়ের সুযোগ নিয়ে এবার গণছিনতাইয়ে নেমেছে দুস্কৃতিকারিরা। অনেক তীর্থযাত্রী ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ।
তীর্থ কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সুখময় চক্রবর্তী ও মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পলাশ চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, মেলাকে কেন্দ্র করে গত দুই দিনে ১০ থেকে ১২ লাখ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে। মঙ্গলবার পুরোদিনই শিব চতুর্দশী তিথি থাকার কারণে ভিড় বেশি হয়েছে। ছিনতাইয়ের বিষয় নিয়ে তারাও উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন।