প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে দেখে। আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় কুমুদিনী ট্রাস্টের ৮৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে শেখ রেহানা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে আমার যাত্রা শুরু। একটাই আলো ছিল, জনগণের ভালোবাসা। সেটা নিয়েই কাজ করেছি। মনে রেখেছি, বাবা কী করতে চেয়েছিলেন। মনে রেখেছি, তার কাজের একটুকুও যদি আমি করতে পারি, সেটাই হবে আমার বড় সাফল্য।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কুমুদিনী ট্রাস্টের মাধ্যমে অনেক কাজ করা হচ্ছে। জনগণের সেবায় ট্রাস্টে সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসার জন্য দেশের বিত্তশালীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিত্তশালীরা যদি আর্ত্মমানবতায় এগিয়ে আসে, তাহলে আর দেশের জনগণের কষ্ট থাকবে না।
নারী শিক্ষার প্রসারে রণদা প্রসাদের ভূমিকা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি একে একে ভারতেশ্বরী হোমস, কুমুদিনী কলেজ এবং পিতার নামে দেবেন্দ্র কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং দেশের বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তিনি আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে মির্জাপুর হেলিপ্যাডে অবতরণ করে শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার। এসময় জেলা পুলিশ প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
পরে বেলা ১১টা ২৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ভারতেশ্বরী হোমস মাঠের অনুষ্ঠান মঞ্চে আসেন। সেখানে তিনি হোমসের ছাত্রীদের সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনে যোগ দেন এবং ছাত্রীদের মনোজ্ঞ ডিসপ্লে দেখেন।
কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অব বেঙ্গল (বিডি) আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল থেকে প্রথমে জেলার ৩১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ১৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ১৭টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ভারতেশ্বরী হোমস মাল্টিপারপাস হল এবং ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট নার্সিং কমপ্লেক্স অ্যান্ড কুমুদিনী কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
পরে চার বিশিষ্ট ব্যক্তিকে রণদা প্রসাদ সাহা স্মারক স্বর্ণপদক দেন প্রধানমন্ত্রী। তারা হলেন- পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (মরণোত্তর), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), নজরুল গবেষক প্রফেসর রফিকুল ইসলাম ও বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী শাহবুদ্দীন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী কুমুদিনী হাসপাতাল ও ভারতেশ্বরী হোমস পরিদর্শন করেন।
সোহরাওয়ার্দীর পক্ষে শেখ রেহানা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পক্ষে তাঁর নাতনী খিলখিল কাজী স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন।