ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক ও কলাম লেখক কুলদীপ নায়ার পরলোক গমন করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লির একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। কুলদীপ নায়ার স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন। দক্ষিণ দিল্লির লোধি শ্মশানে আজই তাঁর মরদেহ দাহ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘কুলদীপ আমাদের সময়ের বুদ্ধিজীবী ছিলেন। অকপট ও ভয়হীন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল তাঁর। বহু দশকজুড়ে তিনি কর্মে নিয়োজিত ছিলেন। জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে তাঁর শক্ত অবস্থান, জনসেবা ও ভারতের উন্নতির প্রতি তাঁর অঙ্গীকার সব সময় স্মরণে থাকবে। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছি।’ তিনি পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
১৯২৩ সালে অবিভক্ত পাঞ্জাবের শিয়ালকোটে (বর্তমানে পাকিস্তানে) জন্ম কুলদীপ নায়ারের। দেশভাগের আগে তিনি লাহোর থেকে আইনে স্নাতক সম্পন্ন করেন। দেশভাগের পর তিনি ভারতে চলে যান। ১৯৯০ সালে ব্রিটেনে ভারতের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া ভারতের উচ্চকক্ষ পার্লামেন্ট রাজ্যসভার সদস্য মনোনীত হন।
২০১২ সালে প্রকাশিত আত্মজীবনীতে প্রবীণ এ সাংবাদিক দেশভাগের পর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা হারানোর ব্যাপারে লেখেন। এ ছাড়া রক্তস্নাত পাঞ্জাবের ওপর দিয়ে দিল্লিতে দেশান্তরী হওয়ায় বাধ্য হয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন।
আত্মজীবনীর ভূমিকায় লেখা রয়েছে, ‘নতুন দেশে বিপদসংকুল যাত্রা এবং তরুণ সাংবাদিক হিসেবে উর্দু দৈনিকে কাজ করা নায়ারের গল্প ভারতেরও গল্প।’
দৈনিক আনজাম থেকে বার্তা সংস্থা ইউএনআইর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কুলদীপ। তাঁর কলাম ‘বিটুইন দ্য লাইনস’ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে তিনি সব সময় সোচ্চার ছিলেন।
বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করেছেন কুলদীপ। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ১৯৭৫ সালে ভারতের জরুরি অবস্থা।