যোগাযোগের দ্রুততম মাধ্যম হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস। যানজটের শহরে নির্দিষ্ট সময়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায় সব শ্রেণির মানুষকে বর্তমানে এই সেবাটি ব্যবহার করতে দেখা যায়। রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের মাধ্যমে একদিকে যেমন সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়, পাশাপাশি এই শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে কর্মসংস্থান হচ্ছে অনেক যুবকের।
বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ব্র্যাকের এক জরিপে দেখা যায় দেশের প্রথম সমস্যা বেকারত্ব আর দ্বিতীয় যোগাযোগ। এ অবস্থায় রাইড শেয়ারিং সেবাটি তরুণ থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষের মাঝে কর্মসংস্থানের নতুন পথ খুলে দিয়েছে। কম খরচে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরে রাইড শেয়ারিং সেবা গ্রহণ করে বেশ সন্তুষ্ট যাত্রীরাও।
নগরের ২নং গেইট থেকে অক্সিজেন যাওয়ার পথে যাত্রী মো. হাসনাইন জয়নিউজকে বলেন, আমি অফিসের কাজে অক্সিজেন যাচ্ছি। রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে যাওয়ার ফলে একদিকে সঠিক সময়ে আমার গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছি অপরদিকে খরচও হচ্ছে তুলনামূলকভাবে অনেক কম। সিএনজি অটোরিকশা কিংবা অন্য গণপরিবহনে গেলে অনেক সময় নষ্ট হয়।
রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের চালক সাঈদ মোহাম্মদ জয়নিউজকে বলেন, আমি একজন ছাত্র। লেখাপড়ার পাশাপাশি রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে নিজের যাবতীয় খরচ মেটাতে পারছি, একইসঙ্গে পরিবারকেও কিছু টাকা পাঠাতে পারছি।
তিনি আরো বলেন, দৈনিক ১৬ থেকে ২০টা রাইড দেওয়ার মাধ্যমে মাসে ১৫-১৮ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব হচ্ছে।
বর্তমানে দেশে রাইড শেয়ারিং মাধ্যমগুলোর মধ্যে উবার, পাঠাও, ও ভাই, সহজ, ওলে অন্যতম। এছাড়া চলো, আমার বাইক, আমার রাইড, ময়ুর, ওয়েজ, ও বোন প্রভৃতি রাইড শেয়ারিং সার্ভিসও রয়েছে।
রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের বিষয়ে জয়নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন ওলে টেকনোলজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, যোগাযোগ মাধ্যমের এই সেবায় একদিকে যেমন অল্পসময়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছা সম্ভব হচ্ছে, অপরদিকে তরুণ থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষের কর্মসংস্থানের ফলে বেকারত্বের হার কমছে।
কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীদের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠলেও নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে এখন জোর দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে রেজাউল করিম বলেন, আমরা শুধুমাত্র ব্যবহারকারীর লোকেশন এবং মোবাইল নম্বরটা প্রয়োজনে নিয়ে থাকি। এছাড়া অন্য তথ্য নিতে গেলে ব্যবহারকারীর অনুমতি চেয়ে থাকি।
তিনি বলেন, রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই গাড়ি কিনে ড্রাইভারদের দিয়ে ভাড়ার টাকা ভাগাভাগি করছে। তবে মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে চিত্রটা একটু অন্যরকম। এখানে বাইকের মালিক নিজেই রাইড শেয়ার করে থাকেন। কেউ এটাকেই পেশা হিসেবে নিয়ে নিয়েছেন, আবার কেউ কিছু উপরি উপার্জন করে তেল খরচের টাকাটুকু তুলছেন। মোটের উপর এই পেশাটির মাধ্যমে দ্রুত যোগাযোগের পাশাপাশি দেশের বেকারত্বও কমছে।