ক্ষমতা ধরে রাখতে রাজনৈতিক গোষ্ঠী ধর্মের অপব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।
সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যে অর্জন যেটা হলো- এদেশের সকল মানুষ সমান অধিকারের অধিকারী হবে, ধর্মকে অপব্যবহার করা যাবে না, ধর্মকে নিয়ে মানুষের মানুষের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করা, বিভেদ-বিভাজন সৃষ্টি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বৈষম্য সৃষ্টি – এটা একদমই আমাদের নীতি-ঐতিহ্য-ধর্মের পরিপন্থি হিসেবে আমরা সংবিধানে স্বীকৃতি দিয়েছি। জাতি হিসেবে আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং এখানে আমরা সকল ধর্মের মানুষ সহাবস্থান করি।
আসুন এটাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার জন্য সেই পরিবেশ, সেই সংস্কৃতি, সেই মূল্যবোধ সারাদেশে ছড়িয়ে দেই, এটাকে ধরে নিয়ে আমাদের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করি।
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্জের দুইটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার নিহত ও আহতের প্রতি শোক ও সংহতি প্রকাশ করতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ক্রাইস্টচার্চের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আমরা যে এই বিষয় নিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোচ্চার হচ্ছি-এটা খুবই উল্লেখযোগ্য। কেননা, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের লক্ষ্যে ছিলো মানুষের মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য, আমাদের সকলের অধিকার রক্ষা করার জন্য, আমাদের বেঁচে থাকার অধিকারকে রক্ষা করার জন্য। আজকে সেই কারণে এ অনুষ্ঠানটা খুবই সময়োপযোগী হয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারকে রক্ষা করার জন্য, মৌলিক অধিকারকে রক্ষা করার জন্য একাত্তর সালে আমাদের সাড়ে ৭ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করেছিলো, দেশ স্বাধীন করেছিলো। স্বাধীনতা না পেলে কিন্তু এখানে মানবাধিকার রক্ষা করা যেতো না।
পাকিস্তান আমলে ‘বিভেদ ও বৈষম্য’ সৃষ্টি করার জন্য কাজে লাগানো হয়েছিলো বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন,‘ পাকিস্তান আমলে সম্প্রদায়িকতাকে লালন করা হয়েছে, ধর্মকে মানুষের মাঝে অপব্যবহার করা হয়েছে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য।
শিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মনজুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সচিব সচিব এএইচএম মোফাজ্জ্বল করীম, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলে এলাহী আকবর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. দিলারা চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক, মাওলানা কামালউদ্দিন জাফরী, মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন ও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বক্তব্য রাখেন।