প্রতিষ্ঠার পর ১৫টি বছর পার হয়ে গেলেও এমপিওভুক্ত হয়নি সন্দ্বীপের একমাত্র বেসরকারি আবুল কাশেম হায়দার মহিলা কলেজ।
সন্দ্বীপের ৪টি বেসরকারি কলেজের মধ্যে ৩টি ইতোমধ্যে এমপিওভুক্ত হয়েছে। সন্দ্বীপ উপজেলায় শুধুমাত্র এ মহিলা কলেজটিই এমপিওভুক্তির বাইরে রয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০০৩ সালে সন্দ্বীপের বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শিক্ষানুরাগী আবুল কাশেম হায়দার তার নামে সন্দ্বীপের হারামিয়া এলাকায় এ কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। দীর্ঘদিনেও কলেজটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীরা।
২০০৩ সালে আবুল কাশেম হায়দার নিজ এলাকার পিছিয়ে পড়া নারীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে এক একর ৪৯ শতক ভূমির উপর কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। হারামিয়া ইউনিয়নের মালেক মুন্সির বাজার সংলগ্ন সন্দ্বীপ ২০ শয্যা হাসপাতাল ও গুপ্তছড়া সড়কের পাশে কলেজটি অবস্থিত। প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পরও কলেজটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় কলেজের প্রায় ১৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক কলেজটি ছাত্রী ভর্তিসহ প্রাথমিক পাঠদানের অনুমতি পায়। এর পরের বছর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শিক্ষা বোর্ড থেকে কলেজটি একাডেমিক স্বীকৃতি পায়। বর্তমানে কলেজটিতে ১০ জন শিক্ষক সামান্য বেতন-ভাতার বিনিময়ে ২৫০ ছাত্রীকে পাঠদান করাচ্ছেন। কলেজটিতে কর্মচারীর সংখ্যা রয়েছে ৯ জন।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. হানিফ জানান, কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে শুধু পাবলিক পরীক্ষায় বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি ফি এবং ছাত্রীদের থেকে সামান্য বেতন নেওয়া হয়। তা থেকে দেওয়া হয় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন । প্রতিমাসে এই বেতন-ভাতা বাবদ ১ লাখ ৯ হাজার টাকা ব্যয় হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠাতা আবুল কাশেম হায়দার প্রতি মাসে প্রদান করেন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা।
অধ্যক্ষ আরো জানান, শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রতিবছর পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ফলাফল সন্তোষজনক। প্রতিষ্ঠার পর ২০০৬ সালে ৮৫ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং ২০০৯ সালে ৮৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাশ করে সন্দ্বীপে কলেজটি ১ম স্থান অধিকার করে।
সরকারের সব নীতিমালা অনুসরণ করে এমপিওর জন্য বারবার আবেদন করেও কলেজটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা আজ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। প্রতিবছর ভালো ফলাফল করেও কোনো প্রাপ্তি ঘটেনি বলে তাঁর আক্ষেপ।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার শাহজাহান বিএ বলেন, কলেজটির এমপিওভুক্তি খুবই প্রয়োজন। তা হলে এলাকার গরিব ও সুবিধাবঞ্চিত মেয়েরা লাভবান হবে। এ ব্যাপারে আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা বলেন, সরকার ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছে প্রতিটি উপজেলার বেসরকারি কলেজগুলো নির্দিষ্ট নিয়ম মোতাবেক পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্ত করা হবে। আগামীতে অবশ্যই সন্দ্বীপের এই একমাত্র মহিলা কলেজটিও এমপিওভুক্তির আওতায় পড়বে। এছাড়া আমি সন্দ্বীপের এমপি থাকাবস্থায় এ কলেজের উন্নয়নের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। ভবিষ্যতেও আমার এ অনুদান অব্যাহত থাকবে।
জনস্বার্থে শিক্ষাবান্ধব এ সরকারের কাছে কলেজটিকে এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
জয়নিউজ/পলাশ/আরসি