মিয়ানমারে সামরিক সরকারকে সরিয়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় এসেছিল শান্তিতে নোবেলজয়ী নেত্রী অং সাং সুচির দল। দেশটির সর্বোচ্চপদে তিনি বসতে না পারলেও কার্যত সরকার প্রধান তিনিই। তবে নির্বাচনের একবছর বাকি থাকতেই সুচির প্রতি মিয়ানমারের সাধারণ নাগরিকরা বিরক্ত। তাদের অভিযোগ গণতন্ত্রকে সীমিত করে রেখেছেন সুচি।
দেশটিতে নতুন বছর উদযাপন করার সময় শাসকদের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গাত্মক কবিতা আবৃত্তি করা হয়। এর নাম থ্যান্চা। সম্প্রতি মিয়ানমারের কয়েকশ’ বছরের পুরানো এই প্রথার ওপর সেন্সরশিপ করেছে সরকার। এরপরই সুচির সরকারের ওপর ক্ষুদ্ধ মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ।
থ্যান্চায় সাধারণত ঢোলের তালে তাল মিলিয়ে নাচ ও ব্যঙ্গাত্মক কবিতা আবৃত্তি করা হয়৷ দেশটির গত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক সরকার থ্যান্চার কবিতা এক সেন্সর প্যানেলে অনুমোদনের জন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে৷
শিক্ষার্থী থ্যান্ট জিন ও অং মিন থ্যু এ বিষয়ে বলেন, জনগণের বার্তা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে থ্যান্চার সৃষ্টি। তারা কেন দেশের জনগণ, শিক্ষার্থীদের কথা শোনার সাহস পাচ্ছে না!
থ্যান্চা নিয়ন্ত্রণের এই চেষ্টার বিরোধিতা করে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়েছেন৷ তাদের মতে, অং সাং সুচি সরকারের আমলে বাকস্বাধীনতা সীমাবদ্ধ পর্যায়ে রয়েছে৷
সুচির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির এক মুখপাত্র বলেন, থ্যান্চার ওপর এই কড়াকড়ি সাময়িক। কেননা, মিয়ানমার গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হচ্ছে৷
উল্লেখ্য, সামরিক জান্তা মিয়ানমারকে কয়েক দশক শাসন করেছে। তখন থ্যান্চা পুরাপুরি নিষিদ্ধ ছিল৷ ২০১৩ সালে দেশটিতে আধা বেসামরিক শাসন শুরু হলে থ্যান্চা চর্চা ফিরে আসে৷ তবে চলতি বছর নববর্ষ শুরুর আগে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে এই চর্চায় সরকারবিরোধী কোনো কিছু না বলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে৷