বিয়ের মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে গার্মেন্টসকর্মী মিলাকে (ছদ্মনাম) ধর্ষণ করেন সিএনজি অটোরিকশাচালক মো. নিজাম উদ্দিন (৩০)। এ খবর জেনে যান নিজামের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগম।
এরপর নিজের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে মিলার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালান তানিয়া। তার চুল কেটে নেওয়া হয়, মুখে দেওয়া হয় জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা। মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয় এসব ঘটনার ভিডিও। এছাড়া মিলার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয় যাতে সে এ ঘটনা পুলিশকে না জানায়।
তবে কথায় আছে ‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে’। কোনোরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে সেখান থেকে বের হয়ে মিলা এ ঘটনা জানায় নগরের সদরঘাট থানা পুলিশকে। কালক্ষেপণ না করে পুলিশও অভিযানে নামে। একে একে গ্রেপ্তার করে সব অভিযুক্তকে।
ঘটনাটি ঘটেছে নগরের পশ্চিম মাদারাবাড়ী ১নং গলির বাটা কোম্পানির বিল্ডিংয়ে। অভিযোগ পেয়ে সোমবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে অটোরিকশাচালক মো. নিজাম উদ্দিন, তার স্ত্রী তানিয়া বেগমসহ (২৭) ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার বাকিরা হলেন পপি বেগম (৩০), সোনিয়া বেগম (২২), মো. লিটন (২৯) ও ফিরোজা বেগম (৬৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে ৯ মাস আগে মিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন নিজাম। পরে তাকে বিয়ের আশ্বাসে ১ এপ্রিল তার ফুফুর বাসা থেকে বের করে এনে ডবলমুরিং থানার চৌমুহনীর নাজির বাড়ির দুবাইওয়ালার ভাড়া ঘরে ওঠে। এরপর তাকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেন নিজাম।
নিজামের স্ত্রী তানিয়া বিষয়টি জানতে পেরে ৭ এপ্রিল সকালে তার বোন পপি বেগম ও নানী ফিরোজা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে নিজাম ও মিলাকে চৌমুহনীর বাসা থেকে তার আরেক বোন সোনিয়া বেগম ও বোন জামাই মো. লিটনের মাদারবাড়ীর বাসায় নিয়ে আসেন। সেখানে এনে মিলার ওপর নির্যাতন শুরু করেন তারা। কাঁচি দিয়ে তার চুল কেটে নেওয়া হয়। মুখে লাগিয়ে দেওয়া হয় কালি। নানী ফিরোজা বেগম জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে মিলার মুখে ছ্যাঁকা দেন।
এসব ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মিলার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়, যাতে মিলা পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করতে না পারে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন জয়নিউজকে বলেন, বাদীর মামলার ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করে সব অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছি। এছাড়া ঘটনায় ব্যবহৃত কাঁচি, মোবাইল ফোন ও বাদীর স্বাক্ষর করা সাদা কাগজটি জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করা হয়েছে।