ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল)। জাতি যথাযোগ্য মর্যাদায় এ দিবস উদযাপন করছে।

- Advertisement -

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে দিনটি অনন্য এক দিন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এদিনে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করে। পরে এই বৈদ্যনাথতলাকেই ঐতিহাসিক মুজিবনগর হিসেবে নামকরণ করা হয়।

- Advertisement -google news follower

অস্থায়ী সরকারের সফল নেতৃত্বে নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।

মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস-২০১৯ উদযাপনের লক্ষ্যে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

- Advertisement -islamibank

মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সকাল ৯টায় মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে মন্ত্রীবর্গ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, স্কাউটস্ এবং স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা গার্ড অব অনার প্রদান ও কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করবেন।

কুচকাওয়াজের পর পরই আনসার ও ভিডিপি অধিদপ্তর দিবসটির সাথে প্রাসঙ্গিক ‘বদলে যাও, বদলে দাও’ শিরোনামের গীতিনাট্য উপস্থাপন করবে। সকাল পৌনে ১১টায় মুজিবনগর শেখ হাসিনা মঞ্চে মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা সভায় সরকারের মন্ত্রীবর্গ, জাতীয় সংসদ সদস্যগণ, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এবং বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন।

বিকেল ৫ টায় মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রের মাঠে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে ঢাকা শহর, মেহেরপুর জেলা শহর ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনা, প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকা এবং আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে।

দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।

এ উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর একই বছরের ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়।

এ দিন ঘোষিত ঘোষণাপত্রে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়।

ঘোষণাপত্রে সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে প্রজাতন্ত্রের উপ-রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়।

এ ছাড়াও তাজউদ্দিন আহমেদ অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী, খন্দকার মোশতাক আহমেদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ মনসুর আলী অর্থমন্ত্রী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী নিযুক্ত হন।

অপরদিকে জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী অস্থায়ী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার এবং মেজর জেনারেল আবদুর রব চীফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন।

১১ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ দেশবাসীর উদ্দেশে বেতার ভাষণ দেন, যা আকাশবাণী থেকে একাধিকবার প্রচারিত হয়। তাজউদ্দিনের ভাষণের মধ্যদিয়েই দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি আইনানুগ সরকার গঠিত হয়েছে।

এরই পথপরিক্রমায় ১৭ এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

পরের দিন দেশ-বিদেশের পত্র-পত্রিকা এবং সংবাদ মাধ্যমে ১৭ এপ্রিল শপথগ্রহণের এই সংবাদ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়।

জয়নিউজ/অভিজিত/শহীদ
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM