বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি জরাজীর্ণ স্কুলঘরে চলত পাঠদান। বেশিরভাগ কক্ষের জানালাই ভাঙা। কোন জানালার একটা পাল্লা আছে তো আরেকটি নেই। ছাদ (টিনের ছাউনি) দিয়ে পানি পড়ে। শ্রেণিকক্ষগুলোর মধ্যে নেই পার্টিশন। ফ্যান আছে তো লাইট নেই। শ্রেণিকক্ষের টিনের দেয়ালও খুলে পড়ছে। সবচেয়ে বড় কথা দীর্ঘদিন ধরে চারজন শিক্ষক কোনো প্রকার বেতন ছাড়াই করে যাচ্ছিলেন পাঠদান!
বলছিলাম হাটহাজারী পৌরসভার পশ্চিম দেওয়ান এলাকার সন্দ্বীপ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা। এ অবস্থার মধ্যেই স্কুলটিতে লেখাপড়া করছে ৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রী!
খবর পেয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন ছুটে যান জরাজীর্ণ বিদ্যালয়টি দেখতে। সার্বিক অবস্থা দেখে ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যালয়টি সংস্কার করে পাঠদান উপযোগী করার উদ্যোগ নেন।
গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জীর্ণ বিদ্যালয় ঘরটি ভেঙে সেমিপাকা বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে ইউএনও। তিনি বলেন, পৌরসভা এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমন জীর্ণ অবস্থা দেখে আফসোস হয় খুব। সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জীর্ণ বিদ্যালয় ঘরটি ভেঙে একটি সেমিপাকা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিই। আগামী এক মাসের মধ্যেই ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করা হবে।
এ ব্যাপারে সন্দ্বীপ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসিনা খানম সাংবাদিকদের জানান, ১৯৯৭ সালে ওয়ার্ল্ড ভিশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তারাই বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি বিদ্যালয় ঘরটি নির্মাণ করে। কিন্তু ২০০৭ সালে সংস্থাটি বিদ্যালয় থেকে তাদের সহায়তা প্রত্যাহার করে নিলে সংকট শুরু হয়।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ২০১২ সাল থেকে স্কুলঘরটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে উঠে। বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় অন্য শিক্ষকরাও স্কুল ছেড়ে দেন। ফলে জোড়াতালি দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।