কক্সবাজারের উখিয়ার কতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো এখন ইয়াবার হাট হিসেবে পরিণত হয়েছে। সরকারি বেসরকারি এনজিও সংস্থার ভুরি ভুরি ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ টাকা পেয়ে এসব রোহিঙ্গারা আরও উন্নত জীবনের আশা করে জড়িয়ে পড়েছে ইয়াবা পাচারে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা নারীরা ইয়াবা পাচারের বাহক হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় অনেক সময় তারা আইনশৃঙ্খলা বাহীনির নজরদারীর বাহিরে থাকে।
২০১৭ সালের ২৫শে আগস্টের পর থেকে যে সমস্ত রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে উখিয়া টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। এসব স্বাবলম্বী রোহিঙ্গাদের পুঁজি মিয়ানমারের কিয়াতের বিনিময়ে ইয়াবা এদেশে নিয়ে আসা। যাতে অতি সহজে ইয়াবা হাত বদল করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। বর্তমানে ইয়াবা পাচার দিন দিন বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতারা।
কুতুপালং ক্যাম্পের হেড মাঝি সিরাজুল মোস্তফা জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেশকিছু রোহিঙ্গা রয়েছে যারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত। এসব রোহিঙ্গারা বালুখালীর পূর্বপাড়া নাফ নদী পার হয়ে সরাসরি ক্যাম্পে চলে আসে ইয়াবার চালান নিয়ে।
সম্প্রতি ৪/৫ জন ইয়াবা কারবারী মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে বালুখালী পূর্ব পাড়া নাফ নদী হয়ে এপাড়ে পৌঁছে। সেখানে অপেক্ষমান আরও ৪/৫ জন ইয়াবা কারবারির মধ্যে টাকা লেনদেন নিয়ে তুমুল সংঘর্ষ হয়। রোহিঙ্গা ইয়াবা কারবারিদের গুলিতে বালুখালী গ্রামের মৃত মো. ছৈয়দের ছেলে নাজমুল গুলিবিদ্ধ হয়।
ইয়াবা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ টি এম রশিদ অভিযোগ করে জানান, ডেইলপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে ইয়াবার চালান সরাসরি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে যাচ্ছে। এছাড়াও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এসব ইয়াবা স্থানীয়ভাবে বাজারজাত করার কারণে স্থানীয় যুব সমাজ লেখাপড়া ছেড়ে ইয়াবাসক্ত হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রোহিঙ্গা নারী পুরুষরা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত অনেক রোহিঙ্গা নারী পুরুষকে ইয়াবা পাচারের সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক হয়েছে। বিভিন্ন কৌশলে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা নিয়ে তারা ক্যাম্পে আসছে। আমরা চেষ্টা করছি স্থানীয় সিন্ডিকেটসহ ইয়াবার সঙ্গে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে।