এবারের এসএসসি পরীক্ষায় নগরের কলেজিয়েট স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে মুহিয মেজবাহ। সোমবার (৬ মে) দুপুর ১টার দিকে সে স্কুলে এসেছিল বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে। কারণ ফলাফল সে আগেই পেয়ে গেছে এসএমএসের মাধ্যমে। দুপুর ১২টার দিকেই তার মুঠোফোনে চলে এসেছে এসএমএস।
একই অবস্থা মুসলিম হাই স্কুলের ইয়াসার আল সামিন এবং ডা. খাস্তগীর স্কুলের সানজিদা সিদ্দিকার। তারা দুইজনও দুপুর ১২টার দিকেই মুঠোফোনে এসএমএস পেয়েছে যে তারা জিপিএ-৫ পেয়েছে। মোবাইল এসএমএম কিংবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফলাফল পেয়ে যাওয়ার কারণে পরীক্ষার্থীরা আগের মতো এখন আর স্কুলে আসে না। ঘরে বসেই তারা পেয়ে যাচ্ছে ফলাফল। তবে স্কুলে এসে বন্ধুদের সঙ্গে একসাথে ফলাফল জানার যে আনন্দ, প্রযুক্তির কারণে সেটি যেন এখন হারাতে বসেছে।
সোমবার দুপুর ১টার দিকে কলেজিয়েট স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী ফলাফল জানতে স্কুলে এসেছে। তবে স্কুলে তখনও ফলাফল দেয়নি। ফলে তারা মুঠোফোনে ফলাফল দেখার চেষ্টা করছিলো। অথচ এ বিদ্যালয় থেকে ৪৫৭ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৫৬ জনই পাস করেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গেও পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা তেমন বাড়ছিল না। একই অবস্থা মুসলিম হাই স্কুল এবং ডা. খাস্তগীর উচ্চ বিদ্যালয়েও। মুসলিম হাই স্কুলে ৩৯২ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে। অথচ এই স্কুলে বেলা দেড়টার দিকে পরীক্ষার্থী ছিল মাত্র ৫০-৬০ জন। ডা. খাস্তগীর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩২৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩২৪ জনই পাস করেছে। কিন্তু দুপুর ২টার দিকে এ স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৭০-৮০ জন।
জানতে চাইলে কলেজিয়েট স্কুলের এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক সুলতানা কাশেম জয়নিউজকে বলেন, বাচ্চারা এখন মুঠোফোনে আগে ফলাফল পেয়ে যায়। ফলে তারা স্কুলে যেতে চায় না। তবে বন্ধুরা সবাই একসাথে ফলাফল জানার মজাই আলাদা। সব বন্ধুদের সঙ্গেও দেখা হয় এসময়। কারণ এরপর অনেক বন্ধুই বিভিন্ন কলেজে চলে যাবে। তখন হয়ত আর দেখাও হবে না। তাই আমার ছেলেকে নিয়ে স্কুলে চলে এসেছি।
কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত দাশ জয়নিউজকে বলেন, যানজট, গরম এবং ইন্টারনেট ও এসএমএসের কারণে পরীক্ষার্থীরা এখন আর স্কুলে আসে না। তবে আমরা সবাইকে স্কুলে আসতে বলি। কারণ একটি স্কুলে একজন শিক্ষার্থী জীবনের একটি দীর্ঘ সময় পার করে। তাই যাদের স্কুলের প্রতি ভালোবাসা আছে, তারা অবশ্যই আসে। তবে প্রযুক্তির কারণে আমাদের আবেগতো আগের মতো নেই। তাই হয়ত স্কুলে এসে ফলাফল দেখার প্রবণতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।