রেজাল্ট জানা মাত্রই ছেলে উৎসের কপালে চুম্বন তিলক এঁকে দিলেন মা স্বরুপা ভট্টাচার্য্য। মার চোখে ছিল আনন্দাশ্রু। আরেক মা সামছুন নাহার তার ছেলে সাকিবকে দোয়া পড়িয়ে দিয়েছিলেন। প্রত্যাশিত রেজাল্ট পেয়ে মা-ছেলের এতো দিনের সংগ্রাম যেন পূর্ণতা পেল। নগরের কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের আজকে সোমবার (৬ মে) সকালের চিত্র ছিল ঠিক এমনই আনন্দের।
তাদের এ আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় তাদের স্কুল (কলেজিয়েট) চট্টগ্রাম বোর্ডে শীর্ষে থাকতে পারার খুশিতে। ২০০৩ সাল থেকেই দীর্ঘ ১৯ বছর (মাঝখানে ১৩ সালে দ্বিতীয় হয়েছিল) প্রথম থাকার সুখানুভূতি ছুঁয়ে যাচ্ছিল স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারী, ছাত্র-অভিভাবক সবার মধ্যেই।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের সেরা ৫
সূত্র জানায়, কলেজিয়েট থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ৪৫৭ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ৪৫৬ জন। এর মধ্যে ৪৫৫ জন বিজ্ঞান বিভাগের ও দুইজন ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী। তারমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১১ জন। বোর্ডে দ্বিতীয় হওয়া মুসলিম হাই স্কুল থেকে প্রায় ১০০ জন বেশি জিপিএ-৫ পাওয়ায় তাদের আত্মজয় ছিল দেখার মত!
তাদের শতভাগ পাসের রেকর্ড করা হলো না এক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায়। তবে ওই শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় সব পরীক্ষা ভালো হয়নি বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: পাসের হারে ছেলেরা এগিয়ে, জিপিএ-৫ এ মেয়েরা
দীর্ঘ এ ধারাবাহিক সাফল্যের রহস্য কী-এই প্রশ্নের জবাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত দাশ জয়নিউজকে বলেন, এইটা আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে ঐতিহ্যগতভাবে প্রতিবছর আমরা ভালো ছাত্র পেয়ে থাকি। তাই তাদের শাণিত করতে আমাদের খুব একটা বেগ পেতে হয় না। আমাদের অভিভাবকরাও খুব সচেতন। আর আমাদের দিকনির্দেশনাতো রয়েছেই।
তিনি আরো বলেন, আমাদের আছে ৫৭ জন অভিজ্ঞ শিক্ষক। তারা ক্লাসটেস্টসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকেন। এছাড়াও চট্টগ্রামে ইংলিশ ল্যাংঙ্গুয়েজ ক্লাব আছে একমাত্র আমাদের। আরো আছে ডিবেটিং ক্লাব। এতো বিশাল মাঠ আর কারো নেই, পড়ালেখায় ভালো করার জন্য খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কৃতকার্য হওয়া সকল শিক্ষার্থীর প্রতি তিনি বলেন, সামনে তারা বৃহৎ পরিসরে যাবে। সেখানে ভালোর পাশাপাশি খারাপের হাতছানিও থাকবে। প্রযুক্তির অন্ধকারময় জগতটা তারা যেন সচেতনভাবে এড়িয়ে চলে, এই আহ্বান জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত দাশ।