রেস্তোরাঁর দেয়ালে সাইনবোর্ড অনেক দেখেছেন। এবার ব্যতিক্রমী এক সাইনবোর্ড দেখার জন্য তৈরি হন।
এখন থেকে রেস্টুরেন্টের দেয়ালে থাকতে পারে বিশেষ এক বার্তা। সেখানে লেখা থাকবে প্রস্তুতকৃত খাবার কোন তেলে ভাজা! তা খাঁটি সয়াবিন তেল হোক কিংবা বাসি ডালডা, খাবার যে তেলেই ভাজা হোক, নামটা কিন্তু লিখতে হবেই!
এরপর সেই তেলের তাল বুঝে খাবার মুখে তুলবেন কি তুলবেন না, সে আপনার ইচ্ছে!
অভিনব এই উদ্যোগটি নিতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। রমজানে খাবারে ভেজালবিরোধী অভিযানে গিয়ে এমনটাই জানালেন জেলা প্রশাসনের দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিলুর রহমান এবং কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম।
শুক্রবার (১০ মে) এই দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যান নগরের জিইসি মোড়ে। অভিযান পরিচালনা করেন মেরিডিয়ান, জামান হোটেল ও বাসমতি রেস্টুরেন্টে। এরমধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরির দায়ে জামান ও বাসমতিকে ৭০ হাজার জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে মেরিডিয়ানকেও সতর্ক করা হয়।
এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বাসমতি রেস্টুরেন্টের এক কর্মকর্তাকে দিয়ে কাগজে লেখান, ‘সম্মানিত ক্রেতাগণ, নিচের এই আইটেমগুলো দিয়ে আমরা ইফতার তৈরি করি। ইফতার পণ্য ভাজতে ডালডা ব্যবহার করা হয়- বাসমতি কর্তৃপক্ষ!’
শুধু এদিনের জন্য নয়, ওই রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে পুরো রমজান মাসজুড়ে তৈরিকৃত ইফতার সামগ্রীতে ব্যবহৃত তেলের নাম লিখে ঝুলিয়ে দিতেও বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জয়নিউজের সঙ্গে আলাপকালে তাহমিলুর রহমান বলেন, রমজান মাসে খাবারে ভেজালরোধে আমরা ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করছি। এখন থেকে আমরা রেস্তোরাঁগুলোর সামনে আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিব তারা কোন তেল দিয়ে খাবার তৈরি করছে। এরপর তা দেখে ক্রেতারা তাদের পছন্দের ইফতার সামগ্রী কিনতে পারবেন।
বাসমতিতে ইফতার কিনতে এসে ফিরে যান শহীদুল ইসলাম। তার মতো ফিরে যাচ্ছিলেন আলফালাহ গলির ওয়াহিদুর রহমানও। তিনি জয়নিউজকে বলেন, বাচ্চাদের জন্য বাসায় তৈরি ইফতারির পাশাপাশি প্রতিদিন কোনো না কোনো খাবার রেস্তোরাঁ থেকে কিনতে হয়। কিন্তু আজ বাসমতি ও জামান হোটেলে এসে খাবারের সামনে লেখা দেখলাম এসব খাবার তৈরি হয় পুরনো ডালডা দিয়ে। রোজার দিনেও তারা এসব ক্ষতিকর খাবার খাওয়াচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক। দরকার হলে পানি খেয়ে রোজা রাখব, তবু এখন থেকে আর বাইরের খাবার খাব না।
এই রেস্টুরেন্টে রোজকার মতো ইফতার কিনতে এসেছিলেন নগরের দুই নম্বর গেইটের বাসিন্দা শাহ আলম। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা মোট আটজন। তাই তার পরিবারে ইফতারের প্রয়োজন ও আয়োজন একটু বেশিই থাকে। তিনি বলেন, চিকেন রোস্ট আর গরুর মাংসের কাবাব কিনেছি অন্য জায়গা থেকে। এখানে (বাসমতি) এসেছিলাম ফ্রাইড চিকেন কেনার জন্য। কিন্তু আজ এই রেস্টুরেন্টের দেয়ালে টাঙানো লেখা দেখে ফিরে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাসমতি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার দিলীপ এস রোজারিও জয়নিউজকে বলেন, ডালডা ফ্রিজে রাখার কারণে একটু পুরনো দেখাচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে আমরা খাবারের মান ঠিক রাখার ক্ষেত্রে আরও সচেতন হব।