বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চট্টগ্রাম নগরের শীর্ষ পদে আছেন তিনি। অভিযোগ আছে, দলের বড় কর্মসূচি এলেই উধাও হয়ে যান তিনি। দলের অন্যান্য নেতারা দিন-রাত পরিশ্রম করে কর্মসূচি আয়োজন শেষ করলে তিনি ঠিক অনুষ্ঠানের দিন হাজির হন!
এ অভিযোগের পালে হাওয়া লেগেছে, বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতেও। কারণ এবারও তিনি কর্মসূচির ঘোষণার পরপর যথারীতি উধাও। তবে আগামীকাল নগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি ঠিকই উপস্থিত থাকবেন।
যাঁর বিরুদ্ধে দলের বড় কর্মসূচিতে উধাও হওয়ার অভিযোগ তিনি ডা. শাহাদাত হোসেন। যিনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি।
১ সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করবে বিএনপির। এর সপ্তাহখানেক আগ থেকে দেশে নেই ডা. শাহাদত। এর আগে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের একদিন আগে তিনি ভারত যেতে চেয়ে বিমানবন্দর থেকে ফেরত এসেছেন। তাঁকে ইমিগ্রেশন পুলিশ দেশ ত্যাগ করতে দেয়নি। ২৬ মার্চ সারাদেশে বিএনপি মহান স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি পালন করলেও চট্টগ্রাম নগর বিএনপি ছিল একেবারে নিষ্প্রভ।
৮ ফেব্রুয়ারি দলের চেয়ারপারসন গ্রেফতার হওয়াকে কেন্দ্র করেও তেমন কর্মসূচি পালন করতে পারেনি চট্টগ্রাম নগর বিএনপি। সেদিন সকালে ডা. শাহাদাত নগর কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মী ছাড়াই একপায়ে একাকী দাঁড়িয়ে ছিলেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আরো কয়েকজন নেতাকর্মী জড়ো হন দলীয় কার্যালয়ে। এক পর্যায়ে ২৩ জন নেতাকর্মী নিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। কেউ কেউ সেটাকে দলের জন্য তাঁর আন্তরিকতা বললেও অনেকের আছে ভিন্ন মত। তাদের মতে, একজন নেতার সফলতা হলো সহকর্মীদের মাঠে সক্রিয় রাখা। কিন্তু কর্মীতো দূরে থাক, তার কমিটির ২৭৫ জনের বিশাল বহরের অর্ধশত নেতাকেও সেদিন মাঠে আনতে পারেননি তিনি।
মাঠে অনুপস্থিতি নিয়ে ওই সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নগর ছাত্রদল সভাপতি ও নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক গাজী সিরাজ উল্ল্যাহর উত্তর ছিল, আমরা গ্রেফতার হলে আন্দোলন করবে কে?
৮ ফেব্রুয়ারি ডা. শাহাদাত গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন ১৫ মার্চ পর্যন্ত। মামলাও ছিল জামিনযোগ্য। কিন্তু তিনি জামিনের আবেদনে করেছিলেন গড়িমসি। অনুমতি পেয়ে নগর বিএনপি যখন ১৬ মার্চ বড় সমাবেশের আয়োজন করলো ঠিক তার আগের দিন জামিনের আবেদন করে তিনি কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে সমাবেশে হাজির হন। এসব নিয়ে দলে চরম অসন্তোষ রয়েছে।
৩১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টায় এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ততক্ষণ পর্যন্ত ডা. শাহাদাত দেশে আসেননি বলে জয়নিউজকে জানান নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বকর। বড় কর্মসূচির আগে সভাপতির অনুপস্থিতির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে নগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান এ ব্যাপারে জয়নিউজকে বলেন, আমরা সবাই মিলে কাজ করছি। এসব নিয়ে এখন ভাবার সময় নেই আমাদের।
এদিকে দলের সিনিয়র নেতারা প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর বিএনপির একাধিক নেতা জয়নিউজকে বলেন, বড় কর্মসূচি ঘোষণার পরপর সভাপতির উধাও হয়ে যাওয়াকে নেতারাতো বটেই কর্মীরা ভালো চোখে দেখছে না। কিন্তু তিনি যেহেতু নগর বিএনপির শীর্ষ পদে আছে তাই এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলছে না। তবে বেশিরভাগ নেতাকর্মীর মধ্যেই এ নিয়ে ক্ষোভ আছে।