সৌম্য সরকার, মারকুটে ব্যাটসম্যান। ওপেনিংয়ে নেমে দেখিয়ে গেলেন, তার ব্যাট হাসলেই হাসে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে টানা তৃতীয় হাফসেঞ্চুরির সঙ্গে দলের জয়ে রাখলেন বড় ভূমিকা। ৪১ বলে ৬৬ রানের ইনিংসে রয়েছে ৩টি বিশাল ছয়।
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, ক্ল্যাসিকেল ব্যাটসম্যান। কিন্তু কাজের কাজ ঠিকই করলেন তিনি। সুযোগ আসলো, এলেন, নামলেন, জয় করে ফিরলেন। আবাহনীর হয়ে যে কাজটা নিয়মিত করতেন, আজ তিনিই করলেন জাতীয় দলের হয়ে। ২৪ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন তিনি। এ যেন এক নতুন সৈকত, যিনি দলের প্রয়োজনে সাতে নেমেও খেললেন এক বিধ্বংসী ইনিংস।
মূলত সৌম্য-সৈকত জড়ে উড়ে গেল উইন্ডিজ। টানা ৬টা ফাইনালে হারের পর ডাবলিনের মাঠে ইতিহাস রচনা করল টাইগাররা। এ যেন এক রূপকথার গল্প। ক্যারিবীয়দের ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথম কোনো মাল্টিন্যশনাল ট্রফি জিতল বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১৭ মে) ডাবলিনে ক্যারিবীয়দের দেওয়া ২১০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে তামিম-সৌম্য ওপেনিং জুটি ঝড়ো সূচনা এনে দেয় বাংলাদেশকে। তবে সৌম্য বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন। তামিম দলীয় ৫৯ রানে ব্যক্তিগত ১৮ রানে বিদায় নেন। এরপর সাব্বির রহমান শূন্য রানে বিদায় নেন।
২৭ বলে ৫০ রান পূর্ণ করে টানা তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন সৌম্য। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৪৯ রান যোগ করেন সৌম্য ও মুশফিক। ৪১ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছয়ে ৬৬ রান করে বিদায় নেন সৌম্য। মুশফিকও হাত খুলতে শুরু করেন। তবে ২২ বলে ৩৬ রান করে দলীয় ১৩৪ রানে বিদায় নেন তিনিও। মোহাম্মদ মিঠুন ১৭ রান করে আউট হন দলের রান যখন ১৪৩। সেসময় কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
এরপরই সব আলো নিজের দিকে টেনে নেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ম্যাচের কঠিন সমীকরণটা একাই সহজ করে দেন তিনি। ক্যারিবীয় বোলাদের ওপর রীতিমতো ঝড় বইয়ে দেন মেসাদ্দেক। ফ্যাবিয়ান অ্যালেনের করা ২২তম ওভারে মোসাদ্দেক একাই ২৫ রান তুলে ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। ২০ বলে ৫০ রান করে বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডটি নিজের করে নেন তিনি।
৭ বল হাতে রেখেই ২১০ রানের টার্গেট টপকে যায় টাইগাররা। ২৪ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থাকা মোসাদ্দেকের ইনিংসটি ২টি চার ও ৫টি ছয়ের মারে সাজানো ছিল। পঞ্চম উইকেট জুটি ৭০ রানে অবিচ্ছিন্ন থাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্যাব্রিয়েল ও রেইফার ২টি এবং অ্যালেন ১টি উইকেট নেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দারুণ সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার শাই হোপ ও সুনীল অ্যামব্রিস। বৃষ্টি বাগড়ায় খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ২০.১ ওভারে ১৩১ রান তুলে ফেলেন দুই উইন্ডিজ ওপেনার শাই হোপ ও সুনীল অ্যামব্রিস। দুজনেই পেয়েছেন ফিফটির দেখা।
বৃষ্টির পর আবারও খেলা শুরু হলে ২৪ ওভারে ম্যাচ নামিয়ে আনা হয়। নির্ধারিত ২৪ ওভারে ১ উইকেটে ১৫২ রান তোলে ক্যারিবীয়রা। হোপ ৬৪ বলে ৭৪ রান করে আউট হন। অ্যামব্রিস ৬৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। তবে বৃষ্টির আইনে বাংলাদেশের সামনে নতুন টার্গেট দাঁড়ায় ২৪ ওভারে ২১০ রান। বাংলাদেশের মিরাজ একমাত্র উইকেটটি নেন।
বাংলাদেশের মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ম্যাচসেরা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের শাই হোপ সিরিজ সেরা হয়েছেন।