রাতারাতি সাবস্টেশন বদলে ওয়েলফুডের শো-রুম!

রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার খবর এখন আর খুব একটা অবাক করে না। তবে যদি শোনেন রাতারাতি সাবস্টেশন বদলে হয়ে গেছে ওয়েলফুডের শো-রুম, অবাক হবেন নিশ্চয়ই?

- Advertisement -

ঘটনা নগরের কাজির দেউরিতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) নির্মিত কাঁচাবাজার ও অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের। অভিজাত এই কমপ্লেক্সে ঢুকতেই কাঁচাবাজার চোখে না পড়লেও ঠিক চোখে পড়বে ওয়েল ফুডের শো-রুম।

- Advertisement -google news follower

কমপ্লেক্সের নিচতলার কাঁচাবাজারের মূল ফটক আড়াল করে সুপার শপ ভাড়ার নামে তৈরি করা হয় বিশাল আকৃতির সিড়ি। সিঁড়ির পাশেই ওয়েল ফুডের শো-রুম।

এই সিঁড়ির কারণে কাঁচাবাজারের মূল ফটক বাইরে থেকে দেখা যায় না বলে অভিযোগ করেছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা।

- Advertisement -islamibank

জানা যায়, ২০১৭ সালে পুরনো বাজার সরিয়ে কাজির দেউরি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স ও কাঁচাবাজার নির্মাণ করে চউক।

কমপ্লেক্সটি নির্মাণের পর চউকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন ও বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকে অভিযোগপত্র জমা দেন কাজীর দেউরি কাঁচাবাজারের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।

এতে দোকান বরাদ্দের নামে লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া, চুক্তির তোয়াক্কা না করে টাকার বিনিময়ে এলোমেলো দোকান বরাদ্দ ও কাঁচাবাজারের সাবস্টেশনের জায়গায় দোকান বরাদ্দ দিয়ে ওয়েলফুডের শো-রুম স্থাপনসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাজির দেউরি কাঁচাবাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা ৩০ বছর ধরে এই কাঁচাবাজারে ব্যবসা করছি। বাজার পুননির্মাণের সময় আমাদের বলা হয়েছিল ভবন তৈরি হওয়ার পর দোকান বরাদ্দে কোনো টাকা দিতে হবে না। পণ্য বিবেচনায় রেখে সিরিয়াল অনুসারে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে। কিন্তু বরাদ্দের সময় যে টাকা দিয়েছে তাকে সিরিয়াল অনুসারে দোকান বরাদ্দ দিয়েছে। আর যে দেয়নি তাকে এলোমেলোভাবে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমি বাধ্য হয়ে তাই টাকা দিয়েছি।

কাজীর দেউরি সিডিএ কাঁচাবাজারের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক জয়নিউজকে বলেন, নতুন ভবন নির্মাণের পর চউক চেয়ারম্যান আবদুর ছালাম চুক্তির তোয়াক্কা না করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আবদুচ ছালাম কাউন্সিলর গিয়াসকে মৌখিকভাবে চউকের বোর্ড সদস্য ঘোষণা করে ও তার মাধ্যমে কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলকে হাত করে টাকার বিনিময়ে এলোমেলো দোকান বরাদ্দ দিয়েছেন।

আবদুর রাজ্জাক আরো অভিযোগ করেন, কাউন্সিলর গিয়াস নিজের শালী ও অন্য এক মহিলার নামে সাবস্টেশনের জায়গায় দোকান বরাদ্দ নিয়ে ছালাম সাহেবের মালিকানাধীন ওয়েলফুডের শো-রুম স্থাপন করেন।

কাজীর দেউরি কাঁচাবাজারের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল জয়নিউজকে বলেন, বাজার সমিতির সভাপতি রাজ্জাক সাহেবের সঙ্গে আমার সবসময় ভালো সম্পর্ক ছিল। হঠাৎ তিনি কেন এসব অবান্তর অভিযোগ করছেন তা বুঝতে পারছি না। তবে আমার মনে হয় সমিতির নির্বাচন নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে।

এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে কাউন্সিলর গিয়াস জয়নিউজকে বলেন, শালীর নামে নয়, আমার স্ত্রীর নামে ও অন্য একজন ব্যবসায়ীর নামে দোকান বরাদ্দ নিয়েছি। আর মার্কেটের দোকান বরাদ্দ চউকের বিষয়। চউক সাবস্টেশনের জায়গায় কেন দোকান বরাদ্দ দিয়েছে তাদের কাছ থেকে জেনে নিন।

চউকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম জয়নিউজকে বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। কাজির দেউরি সিডিএ কাঁচাবাজারে সব দোকান নিয়ম মেনে বরাদ্দ দিয়েছে। আর ওয়েলফুড একটা ব্র্যান্ড। এটি দোকান বরাদ্দ নিতে পারে না। সাবস্টেশন নয়, বরাদ্দ পাওয়া দোকান মালিক থেকে চুক্তি অনুসারে ওয়েলফুড দোকান নিয়েছে।

এদিকে চউকের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানসহ একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করতে চউক ভবনে গেলে তাদের অফিসে পাওয়া যায়নি। ফোনে যোগাযোগ করা হলে একজন অন্যজনের রেফারেন্স দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন।

চউকের প্রকৌশলী শামীম আহমেদকে ফোন করা হলে তিনি জয়নিউজকে বলেন, কাজীর দেউরি সিডিএ কাঁচাবাজার নিয়ে প্রকৌশলী রাজিব দাশ জানবেন। আপনারা ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

চউকের অপর প্রকৌশলী রাজিব দাশের বক্তব্য নিতে চউক ভবনে গেলে জানা যায় তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।

জয়নিউজ/এমজেএইচ
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM