‘আমার আট বছর ফিরিয়ে দাও’ লেখা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসে আছেন প্রেমিকার বাড়ির দরজার সামনে অনন্ত বর্মণ নামে এক যুবক। যুবক অনন্ত অনড়। প্রেমিকা সাড়া না দিলে অনশন ভাঙবেন না তিনি, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন।
রোববার থেকে সোমবার, ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে শরীর খারাপ হচ্ছে ক্রমে। অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসার প্রয়োজনও হয় তার। শেষে সোমবার শেষবেলায় প্রেমিকার বাড়ির বরফ গলল। দুইপক্ষ রাজি হওয়ায় রাতেই মেয়েটিকে সিঁদুর পরিয়ে দেন যুবক। মন্দিরে মালাবদলও হল।
এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ধূপগুড়িতে। এতে খুশি প্রতিবেশিরাও। কারণ ‘জয় হয়েছে ভালবাসার।’
প্রেমিকার বাড়ি ধূপগুড়ি শহরের কলেজপাড়ায়। তার সঙ্গে আলিপুরদুয়ারের এক যুবকের বিয়ে ঠিক হয়। জানতে পেরে রোববার প্রেমিকার বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেন স্থানীয় যুবক অনন্ত বর্মণ।
অনন্তের দাবি, মেয়েটির সঙ্গে তার আট বছর ধরে সম্পর্ক। সম্পর্ক ভেঙে হঠাৎ কাউকে বিয়ে করে চলে যাওয়াটা ঠিক নয়। কিন্তু যুবতীর বাড়ির লোকজন এ সম্পর্ক মানতে নারাজ। মেয়ের অন্যত্র বিয়ে দিতে উদ্যোগী তারা।
অনন্ত আরও দাবি করেন, তার সঙ্গেই বিয়ে দিতে হবে মেয়েটির। পরিবারের সদস্যরাও তার পাশে। বাড়ির ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় অনন্তর বাড়ির লোকজন মেয়েটির বাড়িতে যান।
স্থানীয়রাও মেয়ের বাড়ির লোকজনকে প্রশ্ন করেন, সব জানা সত্ত্বেও কেন তারা লুকিয়ে অন্যত্র মেয়ের বিয়ে ঠিক করছেন?
মেয়ের বাড়ির সদস্যদের দাবি, বিয়েতে মেয়ের আপত্তি ছিল না। বিষয়টি নিয়ে মেয়ের বাড়ির লোকজন পুলিশেও অভিযোগ দায়ের করে।
এর মধ্যে সোমবার (৩ জুন) আলিপুরদুয়ার থেকে পাত্র পক্ষের লোকজন মেয়েটির বাড়িতে আসেন। অনন্ত তাদের বাধা দেন। সব দেখে এলাকার মানুষ এগিয়ে আসেন। তারা প্রেমিকযুগলকে মিলিয়ে দিতে উদ্যোগী হন। রাতে অনন্তের বাড়িতে মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সিঁদুর পরিয়ে তারা যান স্থানীয় কালী মন্দিরে। শাস্ত্র মেনে মন্দিরেই মালাবদল হয় তাদের।
ভালোবাসার জয় পাওয়ার পরে অনন্ত বলেন, তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক দিনের। আমরা দু’জনই খুশি। মেয়ে তখন কনের সাজে, লাজুক মুখে বসে। চারদিকে চিৎকার উঠেছে, ‘ভালবাসার জয় হোক।