সমুদ্রের বিস্তীর্ণ জলরাশির সঙ্গে মিতালি পেতেছেন হাজারো পর্যটক। ঈদের ছুটি উপভোগ করতে কক্সবাজারে ছুটছেন বিভিন্ন বয়সের, শ্রেণি-পেশার, সব ধর্মের ভ্রমণপিয়াসুরা। সমুদ্রসৈকতের জোয়ার-ভাটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উচ্ছ্বাসে মাতছেন পর্যটকরা। যদিও ঈদের দিন সেই আনন্দে বাগড়া দিয়েছিল বৃষ্টি। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিনে রোদ থাকায় সমুদ্রে বেড়েছে মানুষের ভিড়।
এত পর্যটক সামলাতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। আছে জেলা পুলিশের টহলও। এছাড়াও সাগরপাড়ে অর্ধশতাধিক প্রশিক্ষিত লাইফগার্ড কর্মীদেরও দেখা মিলেছে।
ঈদের আগের দিন থেকেই সৈকতে পর্যটকের ভিড় ছিল বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা কর্তাব্যক্তিরা। দিন যত গড়াবে পর্যটক আরো বাড়বে বলে ধারণা করছেন তারা। এরমধ্যেই অনেকে ফোনে-ইমেইলে রুম বুকিং করে রেখেছেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে পর্যাপ্ত গাড়ি থাকায় ভ্রমণ হয়েছে স্বস্তিদায়ক।
এদিকে শুধু সমুদ্রসৈকতে নয়, কক্সবাজারের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোতেও দেখা মিলেছে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। হিমছড়ি ঝর্ণা, ইনানীর পাথুরে সৈকত, দরিয়ানগরে ঢু মেরে আসছেন সবাই। এছাড়াও জেলার ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, রামু বৌদ্ধবিহার, মহেশখালী আদিনাথ মন্দিরেও ঘুরতে যাচ্ছেন পর্যটকরা। অনেকের আবার সোজা গন্তব্য সেন্টমার্টিন।
রাজশাহী থেকে সপরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন নাজমুল হোসেন। তিনি জয়নিজকে বলেন, অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল কক্সবাজারে আসার। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত বলে কথা! এ ঈদের ছুটি কাটাতে তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখানে এলাম। যদিও এখানে সবকিছুর দাম স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। পর্যটন স্পটগুলাতে আরো নজরদারি বাড়ানো উচিত।
এদিকে জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার কটেজ মালিক ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের প্রায় ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজে এখন হাজার হাজার পর্যটক অবস্থান করছেন। শহরজুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পর্যটন স্পটগুলোয় যাতে কেউ হয়রানির স্বীকার না হয় সেজন্য লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামরা।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট) জিল্লুর রহমান জয়নিউজকে বলেন, পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রস্তুত। ট্যুরিস্ট পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্বে রয়েছে। এছাড়াও ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ রেসকিউ টিম, ইভটিজিং কন্ট্রোল টিম, ড্রিংকিং জোন, দ্রুত চিকিৎসাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে পর্যটকদের নিরাপত্তায়।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক বাবলু মজুমদার জয়নিউজকে বলেন, অফিস ছুটি চারদিনের, তাই দুইদিনের জন্য পরিবার নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছি। সমুদ্র আমাকে খুব টানে, তাই প্রতিবছর বন্ধ পেলেই ছুটে আসি।
ঢাকা থেকে দলবেঁধে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা জয়নিউজকে বলেন, একদিন কক্সবাজারে থেকেই সেন্টমার্টিন চলে যাব। সব বন্ধুরা একসঙ্গে এসেছি, তাই খুব আনন্দ হচ্ছে।
কক্সবজার কটেজ মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাজী রাসেল আহম্মদ নোবেল জয়নিউজকে বলেন, নির্ধারিত রেটেই হোটেল-মোটেলের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। বৃষ্টি পড়ায় এবার পর্যটক কিছুটা কমলেও ঈদের পরদিন থেকে মানুষ বাড়বে। সব হোটেল-মোটেল জোন সিসিটিভি ক্যামরার আওতায় আনা হয়েছে।