মাস ছয়েক আগে স্বামীকে হারিয়ে নির্বিকার পারভিন আক্তার। স্বচ্ছ দুই চোখে নোনা জল এখনও নিঃসৃত হয় পারভিনের। চোখের পানির সঙ্গে ধরিত্রীতে যখন বৃষ্টি নামে, তখন টিনের চালা গড়িয়ে আসা পানি বাইরে নয় ফুটো দিয়ে পড়ে জরাজীর্ণ পারভিনের বসতঘরে।
পারভিন হাটহাজারীর মেখলের ফকিরহাট এলাকার খলিফা গ্রামের মৃত মো. ইলিয়াছের স্ত্রী।
রাতটি কোনোরকমে পার করতে পারলেও, হতদরিদ্র স্বামীর রেখে যাওয়া পিতৃহীন চার এতিম সন্তানকে নিয়ে পরের দিনটি কেমন যাবে তা নিয়ে তার দুশ্চিন্তার শেষ নেই।
তবুও কর্তার অবর্তমানে পরিবারের সদস্যদের ভরণ-পোষণ, খাবার-দাবার ও ছেলে-মেয়েদের জন্য ঈদের নতুন কাপড়-চোপড় যোগাড় করতে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করেছেন যাকাত-ফিতরা।
এছাড়া তার আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে পেয়েছেন আর্থিক সহযোগিতা। যা সর্বসাকুল্যে প্রায় হাজার বিশেক টাকার মত। এরমধ্যে সংগৃহীত টাকা দিয়ে সন্তানদের জন্য কাপড়-চোপড় ও ঈদের জন্য কিছু সেমাই-চিনি ক্রয় করে। অবশিষ্ট থাকে প্রায় ৯ হাজার টাকা। তারমধ্যে ঈদে ছেলে-মেয়েরা সালামি পেয়েছে হাজার চারেক টাকা।
খুব যত্নে এসব টাকা রেখেছিল আলমারিতে। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, চোরের বদনজর পড়ে এতিমদের জন্য মায়ের সংগৃহীত টাকার দিকে।
রোববার (৯ জুন) রাত সোয়া ৩টার দিকে তাদের ঘরে চোর প্রবেশ করে এ টাকা চুরি করে। এ সময় পারভিন আক্তারের বড় মেয়ে ইফা মণি চোরের উপস্থিতি টের পেলে চোর বসতঘরের মালামাল তছনছ করে পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে পারভিন আক্তার অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে এ জয়নিউজকে জানান, আমার এতিম সন্তানদের জন্য মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগৃহীত টাকা চুরি করে নিয়ে যেতে চোরের বিবেকে একটুও বাঁধল না। এতিম সন্তানদের মুখে একমুঠো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য রাখা টাকাগুলো চোর চুরি নিয়ে গেল, এর বিচার আল্লাহর হাতে দিলাম।