চট্টগ্রাম নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছিল ২০০১ সালে। এরপর পার হয়েছে ১৭ বছর। কিন্তু এত বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটির গঠনে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
তাই ১৭ বছরের পুরনো আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই চলছে সংগঠনটির কার্যক্রম। এতে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি, কেন্দ্র থেকে দ্রুত নতুন কমিটি দেওয়া হোক।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম একরকম স্থবির হয়ে পড়েছে। কমিটি গঠনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ও আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের নেই কোনো ধরনের তৎপরতাও। ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশ নেতাই বর্তমানে নিস্ক্রিয়। আগে যারা স্বেচ্ছাসেবক লীগ করতেন তারা অনেকেই এখন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগে চলে গেছেন। মূলত দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না হওয়ার কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে ধারণা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাদের।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না হওয়ায় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্য থেকে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসছে না। এ কারণে হতাশা বিরাজ করছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এছাড়া কমিটি না থাকায় একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সংগঠনের কার্যক্রম চালাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা।
নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাহেদ টিটু ক্ষোভের সঙ্গে জয়নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি নেই। আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে প্রায় ১৭ বছর। নতুন কমিটি না হওয়ায় নেতৃত্ব সংকটের কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রমও শক্তিশালী হচ্ছে না। দ্রুত নতুন কমিটি না হলে চট্টগ্রামে নেতা তৈরি করতে হিমশিম খেতে হবে।
তবে আশার বাণী শুনিয়েছেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কে বি এম শাহজাহান। এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, শিগগির কেন্দ্র থেকে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি দেওয়া হবে।
তিনি জয়নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কমিটি নেই একথা সত্য। এ ব্যাপারে কেন্দ্রকেও অনেকবার জানানো হয়েছে। কেন কমিটি হয়নি সেটি আমরাও বলতে পারব না। তবে আশার কথা হচ্ছে, শিগগির নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি দেওয়া হবে। কেন্দ্র থেকে এরকম আভাস দেওয়া হয়েছে।
‘সম্ভবত নগর আওয়ামী লীগের কমিটির জন্য অপেক্ষা করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। নগরে নতুন কমিটি দেওয়া হলে পর্যায়ক্রমে স্বেচ্ছাসেবক লীগেরও কমিটি দেওয়া হবে,‘ যোগ করেন তিনি।
সংগঠনের আরেক যুগ্ম-আহ্বায়ক সালাউদ্দিন আহমেদ জয়নিউজকে বলেন, আমরা চাই কমিটি হোক। কিন্তু চট্টগ্রামে পদপ্রার্থী অনেক বেশি হওয়ার কারণে কমিটি দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ আমাদের সংগঠনে কোনো গ্রুপিং নেই। তাই আমরা চাই কমিটি নিয়ে কোনো গ্রুপিং যেন সৃষ্টি না হয়।
তিনি বলেন, এ বছরের অক্টোবরের মধ্যেই আমরা নতুন কমিটি দেওয়ার চেষ্টা করছি।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি সৈয়দ নুরুল ইসলাম জয়নিউজকে বলেন, সংগঠনের স্বার্থে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কৌশলগত কারণেই হয়ত চট্টগ্রাম নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি হচ্ছে না। শিগগির কমিটি দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা নেই।
তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে ১৭ বছর পার করা কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে অনেককিছুই উচিত, আবার অনেক কিছুই অনুচিত। কিন্তু এরকম তো হরহামেশাই ঘটছে। তাই কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
এ ব্যাপারে জানার জন্য কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাউছারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।