সামনে পবিত্র হজ। শুরু হয়েছে হজযাত্রা। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য আল্লাহর বিধান যথাযথভাবে পালন করা।
কিন্তু পালন করতে গিয়ে নিজেদের অজান্তে অনেক ভুল হয়ে যায়। তাই হজযাত্রায় সহায়ক এমন কিছু জরুরি পরামর্শ এখানে দেওয়া হলো—
১. হজযাত্রীদের যাবতীয় তথ্য, দেশের পরিবার-পরিজনের কাছে ইমেইল, হারানো হজযাত্রীদের খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ হজ মিশনের আইটি হেল্প ডেস্ক সাহায্য করে থাকে।
২. কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ হজ মিশনের মেডিকেল সদস্যদের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
৩. আপনার ট্রাভেল এজেন্সি আপনাকে যথাযথ সুবিধা (দেশ থেকে আপনাকে থাকা, খাওয়াসহ অন্য যেসব সুবিধার কথা বলেছিল) না দিলে আপনি মক্কা ও মদিনার বাংলাদেশ হজ মিশনকে জানাতে পারেন। এতেও আপনি সন্তুষ্ট না থাকলে সৌদির ওয়াজারাতুল হজকে (হজ মন্ত্রণালয়) লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।
৪. মদিনা থেকে যদি মক্কায় আসেন, তাহলে ইহরামের কাপড় সঙ্গে নিতে হবে।
৫. আরাফাতের ময়দানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে খাবার, জুস, ফল ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি হয়। তাই সাবধান থাকবেন।
৬. আরাফাতের ময়দান থেকে যদি হেঁটে মুজদালিফায় আসেন, পথে টয়লেট সেরে নেবেন। কেননা মুজদালিফার টয়লেটে অনেক ভিড় লেগে যায়।
৭. হজ মন্ত্রণালয় মিনার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে (যেখানে হজযাত্রীদের সহজে চোখে পড়ে) কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত ইলেকট্রনিক বিলবোর্ডে পৃথিবীর প্রায় ১৮টি ভাষায় বিভিন্ন জরুরি দিকনির্দেশনা ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রচার করে। সেখানে বাংলাও আছে।
৮. হজের বেশিরভাগ সময় হজযাত্রীদের মিনায় তাঁবুতে অবস্থান করতে হয়। তাই মিনাকে এক হিসেবে তাঁবুর শহর বলা যায়। চারদিকে তাঁবু আর তাঁবু— সব তাঁবু দেখতে একই রকম। মোয়াল্লিম নম্বর বা তাঁবু নম্বর জানা না থাকলে যে কেউই হারিয়ে যেতে পারেন। এ সমস্যা এড়ানোর জন্য যে তাঁবুতে অবস্থান করেন, সেসব তাঁবু চিহ্নিত করে নিন।
৯. মোয়াল্লিম অফিস থেকে তাঁবুর নম্বরসহ কার্ড দেওয়া হয়, তা যত্নে রাখুন। বাইরে বের হওয়ার সময় সঙ্গে রাখুন।
১০. হজযাত্রী সচেতন থাকলে হারিয়ে যাওয়ার কোনো ভয় নেই। অনেক বাংলাদেশি হারিয়ে যাওয়ার কারণে হজের আহকাম বা নিয়মকানুন ঠিকমতো পালন করতে পারেন না।
১১. মক্কা-মদিনায় প্রচুর বাংলাদেশি হোটেল আছে। এসব হোটেলে ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডাল- সবই পাওয়া যায়। হোটেল থেকে পার্সেলে বাড়িতে খাবার নিয়ে দুজন অনায়াসে খেতে পারেন।
১২. মক্কা-মদিনায় অনেক বাংলাদেশি কাজ করেন, তাই ভাষাগত কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেনাকাটার সময় দরদাম করে কিনবেন। এছাড়া হিন্দি ভাষা প্রায় সবাই বুঝে।
১৩. হজের সময় প্রচুর হাঁটাচলা করতে হয়, পকেটে টাকা থাকলেও যানবাহন পাওয়া যায় না। এজন্য হাঁটার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকবেন।
১৪. মিনায় চুল কাটার লোক পাওয়া যায়। নিজেরা নিজেদের চুল কাটবেন না, এতে মাথা কেটে যেতে পারে।
১৫. মিনায় কোনো সমস্যা হলে হজযাত্রীদের সেবা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ হজ মিশনের তাঁবুতে যোগাযোগ করবেন।
১৬. হজের আগে ও পরে আরও উমরাহ করতে চাইলে ‘তানঈম মসজিদ’-এ (উমরাহ মসজিদে) গিয়ে উমরাহর নিয়ত করে আসা যায়। কাবা শরিফের বাইরে বাস অথবা ট্যাক্সিতে উমরাহ মসজিদে যাওয়া যায়।