বৈরী আবহাওয়া ও বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের ফলে কুতুবদিয়া উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানির উচ্চতা ৪-৫ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে উপকূলবর্তী ১৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার রায় খবর পেয়ে মুরালিয়া, জেলেপাড়া, তাবলরচর, কাইয়ারপাড়া, বায়ুবিদ্যুৎ এলাকা, আকবরবলীঘাট, চর ধুরংসহ ১৫টি গ্রাম ঘুরে দেখেন।
পরে তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় প্লাবিত এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবারের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন।
ইউএনও জানান, পূর্ণিমার জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বেড়িবাঁধ এলাকায় বসবাসরত লোকজনকে মাইকিং করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কুতুবদিয়ার ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাধেঁর মধ্যে প্রায় ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন রয়েছে। এ ভাঙনে বেড়িবাঁধ এলাকা দিয়ে পূর্ণিমার জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে ১৫টি গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েকশ পরিবার। জোয়ারের নোনা জলে হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও শত একর বীজতলা তলিয়ে গেছে।
আলী আকবর ডেইলের চেয়ারম্যান নুরুচ্ছাফা জানান, তার ইউনিয়নের পশ্চিম তাবলরচর, আনিচের ডেইল, জেলেপাড়া, কাহারপাড়া এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর জানান, দক্ষিণ মুরালিয়া, অমজাখালী, আজম কলোনী, কৈয়ারবিল মলমচর, উত্তর কৈয়ারবিল, মহাজনপাড়া, মফজল ডিলার পাড়া, বাতিঘর পাড়া, কাইছারপাড়া, নয়াকাটা, আকবরবলী ঘাট, ফয়জানির বাপের পাড়া, পূর্ব নয়াকাটা, উত্তর সতর উদ্দিন, পেয়ারাকাটা, ক্রসডেম বিসিক এলাকায় জোয়ারের নোনা পানি ঢুকে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে উত্তর ধুরুং চর ধুরুং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ফাতেমা বেগম (৬০) বেলেন, আমাদের চোখের সামনে পূর্ণিমার জোয়ারে ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। নিরুপায় হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে এসেছি।
কক্সবাজার জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, আগে থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৭১ পোল্ডারের কুতুবদিয়া দ্বীপে ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাধ ভাঙা ছিল। তিন বছর আগে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রায় ৯২ কোটি টাকায় বাঁধ নির্মাণ করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দিলেও তারা যথাসময়ে কাজ করেনি। তবে জিও ব্যাগে বালি ভর্তি করে জোয়ার ঠেকানোর জন্য কিছু কিছু এলাকায় বাঁধ দেওয়া হয়েছে। গত দুদিন ধরে পশ্চিম তাবলরচর এলাকায় বাঁধে জরুরিভিত্তিতে জোয়ার ঠেকানোর জন্য মাটি দিলেও তা পূর্ণিমার জোয়ারে তা তলিয়ে গেছে।