টানা বর্ষণে বান্দরবানের রুমা-থানচিসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে ওঠা ঝুঁকিপূর্ণ বসতি থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। সন্ধ্যার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি ছাড়তে বসবাসকারীদের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
অব্যাহত বর্ষণে বান্দরবানের ইসলামপুর, শেরেবাংলা নগরসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সাঙ্গু নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার (৭ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় বান্দরবানে ১৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের মৃত্তিকা পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম।
সূত্র জানায়, শনিবার (৬ জুলাই) থেকে বান্দরবানের ৭ উপজেলায় টানা বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কয়েকদিনের চেয়ে সোমবার (৮ জুলাই) আরও বেড়েছে। রোববার সকাল ৯টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত চব্বিশ ঘন্টায় বান্দরবানে ১৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বর্ষণে বান্দরবানে সাঙ্গু নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী তীরবর্তী প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
এদিকে রুমা-থানচি উপজেলা সড়কের নয় মাইল নামক স্থানে পাহাড়ধসে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে সড়ক যোগাযোগ পুনরায় চালু করে। এছাড়াও শহরের ইসলামপুর, কালাঘাটা, বনরূপা পাড়া এবং লামা-সূয়ালক, বান্দরবান-রাঙামাটিসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় থানচিতে ট্যুরিস্ট স্পট রেমাক্রি-তীন্দু-বড়মদক রুটে সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলার ৭ উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়নে ১২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্গতদের ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম বলেন, অবিরাম বর্ষণে বন্যা-পাহাড়ধসের শঙ্কা রয়েছে। জেলায় ১২৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ইতোমধ্যে দেড়শ’ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের সন্ধ্যার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র অথবা নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে যারা ঝুঁকিপূর্ণ বসতি ছেড়ে যাবে না, তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি একসঙ্গে কাজ করছে।
জয়নিউজ/আলাউদ্দিন/আরসি