খাগড়াছড়িতে ভারি বর্ষণের ফলে পাহাড়ি ঢল ও পাহাড় ধসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা। টানা কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে নতুন করে পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে করে জেলার বিভিন্নস্থানে অব্যাহত রয়েছে পাহাড় ধস।
পৌর শহরের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় তিন শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। শহরের শালবাগান এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী অর্ধশতাধিক পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছেন জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমও চলছে পুরোদমে। বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি। এ অবস্থায় খাগড়াছড়ি জেলায় খোলা হয়েছে ৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র।
জানা যায়, খাগড়াছড়িতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬.২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির পাশাপাশি ব্যাপক পাহাড় ধসের শঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে।
টানা বর্ষণে খাগড়াছড়ি শহরের গঞ্জপাড়া, মেহেদীবাগ, মুসলিমপাড়া, বটতলী ও কালাডেবা এলাকার নিন্মাঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা।
এছাড়াও অব্যাহত টানা বর্ষণে খাগড়াছড়ির কলাবাগান, নেন্সিবাজার, মোল্লাপাড়া, আঠার পরিবার, শালবন ও মোহাম্মদপুর এলাকায় পাহাড় ধস হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে দুর্গতের মাঝে শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এদিকে মহালছড়িতে সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়ক যোগাযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পানির নিচে মহালছড়ি সরকারি কলেজও।
রামগড় নাকাপা ব্রিজটির একাংশ পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফেনী নদীর পানি রামগড়ের বিভিন্ন লোকালয়ে ডুকে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বাগান বাজার ব্রিজটি মারাত্বক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। পুরো জেলায় খোলা হয়েছে ৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র। ২০০ টন চাল ও ২ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে খাগড়াছড়ি সদর সেনা জোনের উদ্যোগে ৫০০ মানুষকে রান্না করা ও শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়।