নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজনের নেতৃত্বে বন্দর-পতেঙ্গার ছয় ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেলে চসিক কনফারেন্স হলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠককালে তারা সিটি মেয়রকে ১০ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন।
৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে গোসাইলডাঙ্গা, উত্তর মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ হালিশহর, উত্তর পতেঙ্গা ও দক্ষিণ পতেঙ্গা।
স্মারকলিপিতে সুজন উল্লেখ করেন যে, বন্দর- পতেঙ্গা এলাকায় কয়েকটি আইসিডি কন্টেইনার ডিপো রয়েছে। এই ডিপোগুলোর কাভার্ডভ্যানের বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে স্কুল ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে লোকজন যেমন হতাহত হচ্ছে, তেমনি মারাত্মক যানজটের শিকার হয়ে বন্দর পতেঙ্গার জনজীবন স্থবির হয়ে যাচ্ছে।
বন্দরের কারণে ৩৯নং ওয়ার্ডে নালা-নর্দমার জায়গা ও ড্রেনের ব্যবস্থা বন্ধের পর্যায়ে, যা নিরসনকল্পে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। কিছু অসাধু কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে খাল-নালার জায়গা দখল করে ভরাট করার কারণে পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, পতেঙ্গা ৪১নং ওয়ার্ডে বিমান বন্দরে পশ্চিম রানওয়ে সংলগ্ন খাল দিয়ে ফুলছড়িপাড়া, নাজিরপাড়া, দক্ষিণপাড়া, ডেইলপাড়া, চৌধুরীপাড়া, মাইজপাড়াসহ ৪০নং ওয়ার্ডের পূর্বাংশে বৃষ্টির পানি নদীতে চলে যেত।
বিমান বাহিনী এই খালকে তাদের একক সিদ্ধান্তে প্রতিবন্ধকতা ও অনেক জায়গা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার কারণে এসব জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
৪০নং উত্তর পতেঙ্গাস্থ ভারটেক্সের স্বেচ্ছাচারী দখলদার মনোভাবের কারণে উত্তর পতেঙ্গা পূর্বাংশের জনসাধারণ সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু পানিতে চলাচল করতে হয়।
৩৬,৩৭,৩৮,৩৯, ৪০ ও ৪১ নং ওয়ার্ডগুলোতে যে সকল জায়গায় পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে এবং পানি নামার নালা-খালসহ পানি চলাচলের বাধাপ্রাপ্ত জায়গাগুলো চিহ্নিত করে তা অনতিবিলম্বে উদ্ধার করে জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানের দাবি জানান তারা।
৪১নং ওয়ার্ডের লালদিয়ারচর এলাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৭/১৮ জুলাই উচ্ছেদ করার জন্য সময় বেঁধে দেওয়ায় উচ্ছেদ আতঙ্কে অসহায় লোকগুলো নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। এই বর্ষার মৌসুমে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে তাদের উচ্ছেদের সময়বৃদ্ধি করার জন্য মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে সিডিএ কর্তৃক নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার এবং ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বন্দর-পতেঙ্গায় চলাচলের রোডটি বিশাল গর্ত ও হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানান তিনি। যা দুর্ঘটনা ও জানযটের অন্যতম কারণ।
বন্দর পতেঙ্গাবাসীর প্রাণের দাবি স্থায়ী বেড়িবাঁধ যা প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় চারলেইনে উন্নীত করে নির্মাণ কাজ চলছে। কিন্তু মাত্র ৬ মাসের মাথায় ওয়াকওয়ে ভেঙে পড়ায় জনমনে এই নিয়ে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। যা প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
এসময় চসিক মেয়র স্মারকলিপি গ্রহণ করে বলেন যে, উল্লেখিত দাবিগুলো যৌক্তিক। তিনি এ দাবি সমূহের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, আমি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। আমার কাজ হচ্ছে নগরবাসীর প্রাপ্তসেবা নিশ্চিত করা।
নগরবাসীর সেবা যেখানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি কিংবা বাধাগ্রস্ত হবে ,সেখানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বসে থাকবে না। এক্ষেত্রে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে বলে হুঁশিয়ারী উল্লেখ করেন সিটি মেয়র।
সিটি মেয়র বলেন, ৬০ বর্গমাইল জুড়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এএলাকার মধ্যে কোথায় কোন সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে ,তা সুনির্দিষ্টভাবে অবহিত করলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সমস্যাসমূহ সমাধানের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে।
এসময় আইসিডি ডিপোগুলো শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে মেয়র চসিক,বন্দর ,সিডিএ‘র সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।
চসিক মেয়র আরো বলেন, নগরীর কিছু সংখ্যক ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান খাল-নালা ভরাট ও অবৈধদখল করে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। যার কারণে বৃষ্টির পানি চলাচলে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে যারা পানি চলাচলের বাধা সৃষ্টি করছে,তারা যতবড় প্রভাবশালী হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে উচ্ছেদ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।